২৮ লাখ টাকার কালভার্টের নেই সংযোগ সড়ক

পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউনিয়নের ইউসুফপুর গ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে একটি নতুন কালভার্ট। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে এলাকাবাসীর চলাচলে তৈরি হয়েছে চরম দুর্ভোগ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কালভার্টের দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় ইউসুফপুরসহ আশপাশের গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পাশের সরু বাঁধ দিয়ে হাঁটু সমান কাদায় নেমে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও স্কুল-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে। বর্ষায় চলাচল আরও বেশি বিপজ্জনক। এ ছাড়া জোয়ারের সময় বাঁধে পানি উঠে গেলে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ সিকদার বলেন, ‘এই বয়সে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হয়। জোয়ারের সময় বাঁধে পানি উঠে গেলে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তখন কাদা-পানি পেরিয়ে যেতে হয়। অনেকেই কাদায় পড়ে যায়। প্রতিদিন যেন যুদ্ধ করে বাঁচি।’

শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসা কালভার্টের ওপারে। এখান থেকে যেতে খুব কষ্ট হয়। অনেক সময় পা পিছলে পড়ে যাই। কখনও কখনও ক্লাসেই যেতে পারি না।’

পথচারী আছিয়া বেগম বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে প্রায়ই এ পথ দিয়ে চলাচল করি। খুব ভয় লাগে, কখন জানি পা পিছলে পড়ে যাই। এই দীর্ঘদিনের কষ্ট থেকে মুক্তি চাই।’

এলাকার অনেকে জানান, সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে দিন কাটছে। জরুরি রোগী, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। অনেক সময় সময়মতো পৌঁছানো যায় না। এতে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা থাকে। দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের জোর দাবি তাদের।

স্থানীয় জামায়াত নেতা তোফাজ্জেল হোসাইন সিপাহী বলেন, ‘সরকারি অর্থে এমন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো তৈরি করে ফেলে রাখা দুঃখজনক। সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে অতিসত্বর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হোক।’

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মোকসেদুল আলম বলেন, ‘কালভার্টটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অধীনে ২৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। শীঘ্রই এলাকাবাসী এর সুফল পাবে।’