পাঠ্যবই না আনাই অপরাধ: শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে আহত করলেন শিক্ষক!

ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্কুলে পাঠ্যবই না আনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির অন্তত ৫০ শিক্ষার্থীকে বেধরক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মাস্টারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনার পর তিন শিক্ষার্থীকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  শিক্ষার্থীদের পেটানোর এই ঘটনায় এলাকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।  

বেত্রাঘাতে আহত সরাইল আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সুলতানা সুবর্না এবং একই বিভাগের শিক্ষার্থী মিয়া মুহাম্মদ আমান বলেন, ‘স্কুলে নির্ধারিত ক্লাস না থাকায় আমরা ইংরেজি পাঠ্য বই নিয়ে যাইনি। বই না নিয়ে ক্লাসে আসায় হঠাৎ রেগে গিয়ে শিক্ষক আনোয়ার হোসেন মাস্টার সব শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে বেধরক পেটাতে থাকেন। এসময় ক্লাসের সবাই কান্নাকাটি শুরু করে। অন্য শিক্ষকরা  এগিয়ে এসে আনোয়ার স্যারকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি ক্ষান্ত হননি। পরে অভিভাবকরা এসে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যান।’

এ ঘটনা জানার পর উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে জড়ো হলেও তাদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলেও জানিয়েছে শিক্ষর্থীরা।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও ওয়াহিদা সুলতানা সুবর্নার বাবা ইকবাল হোসেন শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এদিকে বেত্রাঘাতে আহত শিক্ষার্থী মিয়া মুহাম্মদ আমানের বাবা এবং সরাইল আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সহকারী শিক্ষক হাসিব মিয়া বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি নিজে ক্লাসরুমে উপস্থিত ছিলাম। আমার সামনে আমার ছেলেসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীকে পেটাতে থাকেন আনোয়ার স্যার। আমি স্যারকে থামানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি আমার কথায় কর্ণপাত করেননি। উল্টো আমাকে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তবে গরমে অসুস্থ হওয়ায় কয়েক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

তবে এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক আনোয়ার হোসেন মাস্টারের ব্যাক্তিগত ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ ব্যাপারে সরাইলের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী বাইন হীরা জানান, ‘আমরা এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন- 

মিলারদের কারসাজিতে মোটা চালের কেজি ৪০ টাকা

নারী জেএমবি: কেউ স্বামীর প্ররোচনায়- কেউবা নিজেই

/এফএস/