মাটিরাঙার দুর্গম ৬ গ্রামে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার দুর্গম ৬ গ্রামে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকায় তাদের নির্ভর করতে হয় প্রাকৃতিক ছড়া, ঝিরি ও কুয়ার পানির ওপর। আর দূষিত এই পানি পান করার ফলে ওই এলাকার লোকজনের সারাবছর ধরে লেগে থাকে রোগ-বালাই। পানিবাহিত রোগে প্রতিবছর প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। তবে এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।Untitled1

মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি ও বর্ণাল ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের প্রায় ৪৭০টি পরিবার বসবাস করে। এই গ্রামগুলো হলো উপজেলার দুর্গম তবলছড়ি ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম, নতুন ত্রিপুরা পাড়া, তবিদাশ পাড়া এবং বর্ণাল ইউনিয়নের বড় পাড়া, বামা গুমতি ও আমতলী গ্রাম। এসব এলাকার লোকজনের সারা বছরই কাটে বিশুদ্ধ পানির সংকটে। তাই তাদের নির্ভর করতে হয় প্রাকৃতিক ছড়া, ঝিরি ও কুয়ার পানির ওপর। আর দূষিত পানি পান করার ফলে সারা বছর ধরেই ডায়রিয়া-কলেরা-চুলকানীসহ নানা পানি বাহিত রোগ ঘরে ঘরে লেগে থাকে। এই দুই উপজেলার মতো পুরো জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায়ও রয়েছে এই পানি সমস্যা।
মাটিরাঙ্গা উপজেলার বর্ণাল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অনিরঞ্জন ত্রিপুরা জানান, তার এলাকায় সাধারণ টিউবওয়েল বসানো যায় না, কারণ মাটির নিচে পাথর রয়েছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা এখানে প্রকট। পানি সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।
একই উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আবুল হাশেম জানান, তার ওয়ার্ডের ৪ থেকে ৫টি গ্রামের মানুষ বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে। এলাকাগুলো ভুগর্ভস্তরে পাথর থাকায় সাধারণ নলকুপ বসানো যাচ্ছে না। এলাকাবাসীর আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সাব-মারসিবল ও ডিপ টিউভওয়েল বসাতে পারছেন না।Untitled
কুয়ার পানি পান করে ওই এলাকার মানুষ নানা রোগে ভুগছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ২০০৯-২০১২ সাল পর্যন্ত ভূ-গর্ভস্থ পাথরের বেষ্টনী এলাকা শনাক্ত করার জন্য জরিপ করেছে। জরিপের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পগুলো পাশ হলে এসব এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আশা করছেন, খুব তাড়াতাড়ি দুর্গম এলাকাগুলোর পানি সমস্যার সমাধান হবে।
/এমডিপি/আপ-এআর/