চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটিতে ৬০ সদস্যের উদ্ধার টিম

বান্দরবনে পাহাড় ধসকয়েকদিনের টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বুধবার (১৪ জুন) রাত পর্যন্ত ১০৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তা পুনরায় চালু হবে। এ কাজে যোগ দিতে চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি পৌঁছেছে ৬০ সদস্যের একটি টিম। সকাল থেকে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেবে টিমটি।

বান্দরবান, রাঙামাটি, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পাহাড় ধসে কমপক্ষে ১৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাঙামাটিতেই সেনা কর্মকর্তাসহ নিহতের সংখ্যা ১০৫। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. দিদার হোসেন জানান, চট্টগ্রাম থেকে ৬০ সদস্যের উদ্ধার টিম সন্ধ্যায় রাঙামাটি এসে পৌঁছেছে। সকালে তারা উদ্ধার অভিযানে যোগ দেবে। বৃহস্পতিবার উদ্ধার অভিযান শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

জেলা প্রশাসক মানজুরুল মান্নান জানান, রাঙামাটি সদরে দুই সেনা কর্মকর্তা ও দুই সেনা সদস্যসহ ৫৩ জন, কাপ্তাইয়ে ১৮ জন ও কাউখালীতে ২৩ জন, বিলাইছড়িতে ২ জন ও জুড়াইছড়িতে ২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাঙামাটি সদর হাসপাতালে আহত ৫৬ জন ভর্তি রয়েছেন।

রাঙামাটিতে গত ১২ জুন থেকে শুরু হওয়া বর্ষণে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে ধসে পড়ে। ধসে পড়া মাটির নিচে এখনও অনেকে চাপা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ চালাতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।

বুধবার জেলা প্রশাসক সরকারি সব বিভাগের প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন।

এ বৈঠকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলার সরকারি সব বিভাগের প্রধানদের নিয়ে করা হয়েছে ত্রাণ বিতরণ কমিটি। এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদারকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন উপদেষ্টা কমিটি।

পাহাড় ধসের ক্ষয়ক্ষত নিরূপণ করতে একটি অ্যাসেসমেন্ট কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। এতে স্থানীয় সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড সদস্যরা থাকবেন। বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও পশু সম্পদ বিভাগের একজন করে প্রতিনিধিও থাকবেন কমিটিতে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার জানিয়েছেন, রাঙামাটিতে এ পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকা ত্রাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮ শতাধিক মানুষ থাকলেও বুধবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৮৮।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলায় বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। বুধবার সড়ক পথে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ চালু হয়েছে। তবে আন্তঃজেলা বাস চলাচল এখনও বন্ধ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দু’দিনের মধ্যে শহরে যদি পণ্য ঢুকতে না পারে পুরো জেলায় খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। সিএনজিসহ যানবাহনের জ্বালানি তেল সংগ্রহে পাম্পগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। পাম্পগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে ডিজেলের দাম। অনেক পাম্পে ছোটখাটো বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেছে।

/এএ/জেএইচ/