রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিয়েছে বিএনপি, জানে না প্রশাসন

সপ্তাহ দুয়েক আগে ত্রাণ দিতে গিয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাবাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে বিএনপি ত্রাণ বিতরণ করেছে। দলটির দফতর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বাংলা ট্রিবিউনকে একথা জানিয়েছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে তাদের কিছুই জানা নেই।

গত দুই সপ্তাহ ধরেই তারা ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা করছিল। তবে স্থানীয় প্রশাসনের বাধার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা ওই সময় ত্রাণ দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছিল। অবশেষে তারা ত্রাণ বিতরণ করছে বলে দাবি করেছে।

রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি দল ২২টি ত্রাণবাহী ট্রাক নিয়ে কক্সবাজারে আসেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার পথে প্রশাসন তাদের বাধা দেয়। এরপর প্রায় চার হাজার মানুষের জন্য নিয়ে আসা ত্রাণ কক্সবাজার বিএনপির কার্যালয়েই জমা রাখা হয়।

কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র দফতর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বলেন, ‘প্রশাসন বাধা দেওয়ার পরের দিন রোহিঙ্গাদের জন্য নিয়ে আসা ত্রাণগুলো বিতরণ করা হয়েছে। প্রথমে মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় নেতারা কিছু ত্রাণ বিতরণ করেন। পরে স্থানীয় নেতারা বাকি ত্রাণগুলো বিতরণ করেন। এসময় প্রশাসন কোনও বাধা দেয়নি।’

রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিচ্ছেন বিএনপি নেতারা

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির ত্রাণ বিতরণ সম্পর্কে আমার জানা নেই।’ তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) মাহিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরমর্শ দেন।

যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহিদুর রহমানও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই তো বিএনপির ত্রাণ আমাদের হেফাজতে ছিল না। বিএনপি সেগুলো কী করেছে সে সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই।’

এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন বলেছিলেন, ‘উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ব্যক্তিগত ভাবেও অনেকে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু, তারা প্রত্যেকেই জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করছে। কারণ, তাদের স্ব-উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করতে গেলেই রোহিঙ্গারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করতে বিএনপিকে বলা হয়েছে। কিন্তু, বিএনপি তাদের ত্রাণ তারা নিজেরাই দিতে চেয়েছিল। এ কারণে ত্রাণ বিতরণে প্রশাসন বাধা দেয়।’

প্রসঙ্গত, ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রোহিঙ্গাদের জন্য ২২ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে কক্সবাজারে আসেন। কিন্তু প্রশাসনের বাধার মুখে তারা ত্রাণ দলের স্থানীয় কার্যালয়ে জমা রেখে চলে যান।