রাখাইনে এখনও সহিংসতা চলছে: ইউএনএইচসিআর

লুইস অভিনমিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর এখনও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। তারা এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যে কারণে রোহিঙ্গারা এখনও বাংলাদেশমুখী। নিজেদের নিরাপদে রাখতে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে কক্সবাজারে স্থানীয় এক হোটেলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) সিনিয়র ইমার্জেন্সি কো-অর্ডিনেটর লুইস অভিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে লুইস অভিন বলেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গারা এখনও অনিরাপদ বোধ করছে। তারা সব সময় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করছে। তারা রাখাইনে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে না। তারা আতঙ্কের মধ্যে থাকে। পরিবারের সিংহভাগই যেহেতু বাংলাদেশে চলে এসেছে, এ কারণে রোহিঙ্গারা এখনও বাংলাদেশ সীমান্তমুখী। তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। রাখাইনের পরিস্থিতি যতদিন উন্নতি না হয়,অথবা স্বাধীনভাবে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি না হয় ততোদিন রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসা থামবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আলোচনা চলছে। ইউএনএইচআর আশা করে, মিয়ানমারের সঙ্গে এমনভাবে বাংলাদেশের চুক্তি হোক যাতে রোহিঙ্গারা রাখাইনে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে ফেরত যেতে পারে । তারা যাতে স্বাধীনভাবে রাখাইনে বসবাস করতে পারে । এ ব্যাপারে ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের সবসময় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’
তিনি উল্লেখ করে বলেন, ‘অতীতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো হলেও তারা বার বার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে চলে এসেছে।’ এবারের প্রত্যাবাসন চুক্তি যাতে আগের মতো না হয় সে প্রত্যাশার কথাও জানান তিনি।
লুইস অভিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার ও রাখাইনে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।’
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে গড়ে সাড়ে সাত ভাগ অর্থাৎ প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। একই সঙ্গে পালিয়ে আসা ২৫ ভাগ রোহিঙ্গা অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছে।’
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৫ আগষ্ট থেকে এই পর্যন্ত ৬ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।