নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, ‘সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় যোগ দিতে শিক্ষকদের সঙ্গে মঞ্চে ওঠি। সঙ্গে সঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন ও জাকের হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নামধারী এক শ্রেণির নৈরাজ্যকারী আমার দিকে তেড়ে আসে। আমাকে ও উপস্থিত শিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করতে আসে । এসময় কেউ কেউ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়। এছাড়াও আমার ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ কথা-বার্তা বলে। এসময় অনুষ্ঠানস্থলে চেয়ার ভাঙচুর করে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে তারা।’
নাজনীন সরওয়ার কাবরী আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ নামধারী এসব ছেলেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে অপমানে আমি আমার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয়সহ আমার কেন্দ্রীয় নেতাদের বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’
নাজনীন কাবরী বলেন, ‘স্থানীয় একজন সংসদ সদস্য ও এক শ্রেণির ভূমিদস্যুদের মদদপুষ্ট হয়ে এসব ছেলেরা আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। কারণ ছাত্রলীগের কক্সবাজার সরকারি কলেজ শাখার একটি অংশ ওই ভূমিদস্যুদের সঙ্গে জড়িত। তারা কলেজের পূর্ব পাশে প্রায় ৪ থেকে ৫ একর জমি নিয়ে কলেজের সঙ্গে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে। কলেজের মাঠ দখলে নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য রাতের আঁধারে সড়ক নির্মাণ ও দখলে নিতে চায়। তাই আমি আগে থেকে এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। এজন্য এসব ছেলেরা আমার ওপর আগে থেকে ক্ষিপ্ত ছিল।’
এদিকে বিকালে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জাকের হোসেন। তিনি বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরীকে কোনোভাবে লাঞ্ছিত করা হয়নি। তিনি আমাদের শ্রদ্বেয় একজন নেত্রী। কিন্তু, আজ সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে কোনও আমন্ত্রণ ছাড়াই মঞ্চে ওঠে কলেজের শিক্ষক শেখ দিদারুল আলমের কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে আকস্মিক ছাত্রলীগের ওপর চড়াও হয়। এতে শুধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই নয় কলেজের শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, জসিম উদ্দিন, উৎপল বড়ুয়া, সালাউদ্দিন, সাব্বিরুল হক জুলাইব, শরীফ হোসাইন সিকদার, আবরার সাকিব, তোফায়েল, রায়হান ও মুনসেফসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোরশেত হোসাইন তানিম বলেন, ‘নাজনীন সরওয়ার কাবেরী আমাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। জেলা সভাপতির সঙ্গে আলাপ করে ছাত্রলীগের পক্ষে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল হক জানান, আমন্ত্রণ ছাড়া হঠাৎ করে কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী উপস্থিত হন এবং মঞ্চে গিয়ে ওঠেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রতিবাদ করা হয়। এতে ছাত্রলীগের নেতারাও ছিল। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে কাবেরীকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। কাবেরী চলে যাওয়ার পর অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।