বার্মিজ ভাষায় লেখা ওই চিঠিতে পুরনো সদস্যদের আগামী ৩১ মার্চ প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন পাড়া থেকে পাহাড়ি যুবকদের নতুন করে রিক্রুট করতে বলা হয়েছে।
এ সংবাদ পাওয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা থানচিতে বৈঠকে বসে। বৈঠকে সীমান্তের কিছু যুবকও অংশ নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই যুবকদের আতঙ্কিত না হতে বলা হয়েছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আলীকদমের সেনা জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুবুর রহমান, বলিপাড়া বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর রুহুল আমিন, বান্দরবান রিজিয়নের কর্মকর্তা মেজর মাহাফুজুল হক, থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমাসহ তিন্দু ও রেমাক্রি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন জানান, চিঠি পাওয়ার পর থেকে সীমান্তের যুবকরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এরইমধ্যে
ভয়ে কিছু মারমা যুবক সংগঠনটিতে যোগও দিয়েছে। তবে অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যা হ্লা চিং মারমা বলেন, ‘বাংলাদেশি নাগরিকদের আরকান আর্মিতে যোগ দিতে বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে আমরা একটি বৈঠক করেছি। বৈঠকে আমরা চিঠিটি পড়েছি। চিঠিতে পাহাড়ি যুবকদের ‘আরকান আর্মির বিভিন্ন ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ৩১ মার্চের প্রশিক্ষণে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পুরনো সদস্যদের আবারও দলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন,‘তবে আরকান আর্মির ক্যাম্প কোথায় তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। ক্যাম্প কোথায় তা আমরাও জানি না। সবাইকে এ বিষয়ে সর্তক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
থানচির স্থানীয় সাংবাদিক অনুপম মারমা। বার্মিজ ভাষা জানা এই সাংবাদিক বলেন, ‘বার্মিজ ভাষায় লেখা ওই চিঠিতে ট্রেনিং এ অংশ নিতে বলায় সীমান্ত এলাকার অনেক যুবক পালিয়ে থানচি সদরে চলে এসেছেন। আমাদের এখানে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাসায় তারা আশ্রয় নিয়েছেন।’ তিনি চিঠির বিষয় সম্পর্কে বলেন, ‘‘২০১৮ সালের ৩১ মার্চে ১৫ দিনের জন্য প্রশিক্ষণ শুরু হবে। আগ্রহীদের ২১৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ২ নম্বর ক্যাম্পে ২৮ তারিখের মধ্যে আসার জন্য জানানো গেলো। চিঠির নিচের দিকে উল্লেখ করা হয়েছে, ২১৫ নম্বর ব্যাটালিয়ন, ২ নম্বর ক্যাম্প, রাখাইন আর্মি।’
এদিকে থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে প্রশাসনিকভাবে যে মিটিংটি হয়েছে, তাতে আমি ছিলাম না। এগুলো সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় বিষয়টি বিজিবি দেখছে।’
বলিপাড়া বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর রুহুল আমিন জানান, ‘আমরা বিষয়টি জানার পরপরই প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি সতর্ক রয়েছে।’
এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা এরইমধ্যে আলোচনা করেছি। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’