চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল বন্ধ

01কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানে অবহেলার অভিযোগে অগ্নিদগ্ধ এক রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকদের মারধর করেছে। এর জের ধরে হাসপাতালের গেটে তালা লাগিয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকৎসক আশেকুর রহমান জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে হাসান মাহমুদ (৩৬) নামে অগ্নিদগ্ধ এক রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি কক্সবাজার শহরের লাইট হাউস পাড়ার বাসিন্দা। মাহমুদকে জরুরি বিভাগে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ভর্তির পর চিকিৎসা বিলম্ব হওয়ার অভিযোগ এনে রোগীর স্বজনরা হৈ-চৈ করে চিকিৎসকের ওপর হামলা করে। এতে আহত হন- হাসপাতালের চিকিৎসক শাফায়েত আরফাত ও তাওহিদ ইবনে আলা উদ্দিন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর পর পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ আসার আগেই রোগীকে নিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের গেটে তালা লাগিয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে রেখেছে চিকিৎসকরা।02
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবয়াধক ডা. পচুনু জানান, হামলায় ২ জন চিকিৎসক আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার পর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা চিকিৎসা প্রদান থেকে বিরত রয়েছেন। হামলাকারীরা আটক না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি। কক্সবাজার সদর থানার ওসি খন্দকার ফরিদ উদ্দিন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখায় হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতালের বাইরে শত শত রোগী চিকিৎসার অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে।
হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষামান রোগী আলমগীর হোসেন বলেন, হাসপাতালের তিনটি গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে চিকিৎসকরা। আমরা টেকনাফ থেকে এসেছি। আমরা জানতাম না যে হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।
একই অভিযোগ হাসপাতালের ভেতরে থাকা রোগী মরিয়ম খাতুনের। তিনি বলেন, হাসপাতালের বাইরে যেতে পারছি না। এ কারণে পরীক্ষা ও ওষুধ কিনে আনতে না পারলে আমার শিশু পুত্র ফাহিমের অবস্থার অবনতি হবে।
সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়ায় ভেতরে ও বাইরে শত শত রোগী অপেক্ষা করছে। কেউ কোনও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। আবার কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালের দেওয়াল টপকে হাসপাতাল থেকে বের হচ্ছে। এতে বিশেষ করে নারী ও শিশু রোগীদের ঝুঁকি বেশি।