নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর বলেন, ‘শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জামিয়া রমিজিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার মাঠে সমাবেশ করতে হবে এবং দুই ঘণ্টার মধ্যে শেষ করতে হবে।’
সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা সামছুদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্বরাষ্টমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা অনুমতি পেয়েছি। আমি ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসছি।’
নাসিরনগরের নাসিরপুর আহমদিয়া মসজিদের ইমাম মাওলানা শামসুদ্দিন মাসুম বলেন, ‘আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। কখন কী হয় কিছু বুঝতে পারছি না। সবার মধ্যেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’
আহমদিয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে সেক্রেটারি উমুরে আমা (সাধারণ ও কল্যাণ) মোহাম্মাদ আব্দুস সামাদ স্থানীয় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জানমাল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা চেয়ে গত ১০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পৃথক লিখিত আবেদন পাঠান। ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মহাসমাবেশ থেকে উসকানিমূলক ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে সরল প্রাণ মুসলমানদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করা হবে এবং এই সুযোগে কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী যে কোনও ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম সংগঠিত করবে এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করবে।’
মিছিল শেষে স্থানীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মাওলানা মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমির সভাপতিত্বে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘মহাসমাবেশের জন্য তারা জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতি চেয়েছে। অনুমতি নিয়ে গড়িমসি চলছে। যদি অনুমতি নাও দেওয়া হয়, তারা যেকোনও মূল্যে, প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে মহাসমাবেশ করবে।’
সভায় বক্তব্য দেন মুফতি আবদুল হক, মাওলানা মুহাম্মাদ শামসুদ্দিন, মাওলানা আব্দুস সাত্তার, মাওলানা মুমিনুদ্দিন ওসমানী, মাওলানা আবদুল হান্নান, মাওলানা আনোয়ার বিন মুসলিম ও মাওলানা এস এম শহিদুল্লাহ্ মাওলানা মাসুদুর রহমান প্রমুখ। মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরীর।
মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে হেফাজতে ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি আল্লমা মুনিরুজ্জামান সিরাজী এবং জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধ্যক্ষ মুফতি মোবারকুল্লাহ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর সদরে ওই সহিংসতায় ১০/১৫টি মন্দির, প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন:
আতঙ্কে নাসিরনগরের আহমদিয়া সম্প্রদায়