কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান বাংলা ট্রিব্রিউনকে বলেন, ‘কাগজ আমদানির ঘোষণা দিয়ে আনা পণ্যের চালানে বালুমাটি আনর বিষয়টি সন্দেহজনক। তাই আমরা চালানটি আটকে দিয়েছি। চীন থেকে আসা ওই বালু মাটিতে কোনও মূল্যবান খনিজ পদার্থ আছে কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। বালু মাটি রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি কাগজ আমদানির কথা বলে কৌশলে অর্থ পাচার করেছেন কিনা, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।
তিনি আরও বলেন, ‘আলোচ্য এই চালানে মানিলন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতারণার শিকার হয়েছেন কিনা এ বিষয়ে জানতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার প্রোগ্রেস ইমপেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ এম এ আকবরকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা করা হলেও তিনি মোবাইল কল রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠিয়ে অনুরোধ জানানোর পরও তার কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
কাস্টমস হাউজ সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার প্রোগ্রেস ইমপেক্স লিমিটেড গত ২৮ আগস্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এস এ জেড ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রামের মাধ্যমে ডাবল-এ ফোর সাইজের কাগজ নামীয় পণ্য ছাড় করার চেষ্টা করে। পণ্য খালাসের আগে আনস্টাফিং কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে ডাবল-এ ফোর কাগজের পরিবর্তে ময়লা আর্বজনা দেখতে পায়। পরে তারা বিষয়টি কাস্টম কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামানকে অবহিত করেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে কনটেইনারটি আটক করা হয়। শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) ডেপুটি কমিশনারের উপস্থিতিতে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় কাগজের পরিবর্তে ওই কন্টেইনারে মাটি ও বালি জাতীয় পাদার্থ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, কাগজ আমদানির জন্য গত ২১ জুন ব্র্যাক ব্যাংকের ঢাকার একটি শাখা থেকে ১৫ হাজার ৪৪০ মার্কিন ডলারের লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) ইস্যু করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রগ্রেস ইমপেক্স লিমিটেড। হ্যাপি বী নামের জাহাজের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কন্টেইনার আমদানি করা হয়। জাহাজটি গত ১৩ আগস্ট চীনের তিয়ানজিনশিঙ্গাং (Tianjinxingang) বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর ব্যাংকিং চ্যানেলে এই সাড়ে ১৫ হাজার ডলার চীনের প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হয়। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চালানটি খালাসের জন্য কাস্টম হাউসে শুল্ক কর বাবদ প্রায় ৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে। এরপর গত ২৮ আগস্ট কভার্ডভ্যান নিয়ে পণ্য খালাসের জন্য আমদানিকারকের প্রতিনিধি বন্দরে যান। এসময় কাস্টমস কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কনটেইনারটি খুলে তাতে কাগজের পরিবর্তে বস্তা ভর্তি বালু পাওয়া যায়। কন্টেইনারটিতে ৪১০ বস্তা বালু ছিল।