বিএনপি নেতা আমীর খসরু কারাগারে

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (ফাইল ছবি)বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রবিবার (২১ অক্টোবর) মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দীন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই মামলায় আমীর খসরু মাহমুদ ২১ অক্টোবর পর্যন্ত জামিনে ছিলেন।

অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দীন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এই মামলায় তিনি উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন। আজ স্থায়ী জামিন আবেদনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করে। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

গত ৪ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর একটি অডিও কথোপকথন ফাঁস হয়। এ অডিওতে নিরাপদ সড়ক দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার কথা উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন নাশকতায় উসকানি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর মামলা দায়ের করেন। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/৩ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। পরে এই মামলায় প্রথমে উচ্চ আদালত থেকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জামিন নিয়েছিলেন।
সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ৭ অক্টোবর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় জামিন আবেদন করেন। এর আগে গত ১ অক্টোবর জামিন স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আদালত ২১ অক্টোবর জামিন আবেদনের পূর্ণাঙ্গ শুনানি হওয়া পর্যন্ত জামিন বর্ধিত করেছেন।

এদিকে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশে এখন চলছে সরকারি প্রতিহিংসার প্রবল প্রতাপ। আর এই প্রতিহিংসার ছোবলে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল, ভিন্নমত ও বিশ্বাসের মানুষদের ক্ষত-বিক্ষত করছে। আজ তারই একটি বহিঃপ্রকাশ ঘটলো বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটকের মধ্য দিয়ে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘নব্য বাকশালী শাসনের অন্তরায় মনে করেই আমীর খসরুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে ভোটারশূন্য করার জন্য সরকার নানা ফন্দি এঁটে চলছে। ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন করার জন্যই বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন শাসকগোষ্ঠী জনমতকে তোয়াক্কা করছে না। আওয়ামী সরকার জনগণকেই সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনাচারের ওপর নির্ভর করেই সরকার টিকে থাকতে চাচ্ছে, কিন্তু তাতে সরকারের শেষরক্ষা হবে না। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সরকারের সব অপকর্মের জবাব দিতেই জনগণ পথে-পথে ব্যারিকেড তৈরি করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি অবিলম্বে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তার নিঃর্শত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’