জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, দামও কম

01পূর্ণিমার জোয়ারে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ, এতে বেশ খুশি জেলেরা। গত দুই দিন ধরে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় দেড়শ টন জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়েছে। এর ফলে দামও কমেছে ইলিশের। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখে।

কয়েকটি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর মাছের আড়ত ফিশারি ঘাটে বসেছে ইলিশের মেলা। আড়তে সাজিয়ে তা বাজারজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। জেলেদের ধরা মাছ আড়তে তুলে হাঁক-ডাক দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত দামে সেসব মাছ কিনে নিচ্ছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা। এরপর দূর-দূরান্তে নেওয়ার জন্য ড্রামে সংরক্ষণ করা হচ্ছে মাছগুলো। জেলেদের হাত থেকে আড়তদার, সেখান থেকে পাইকার এবং বেপারিদের হাত ঘুরে এসব মাছ চলে যাচ্ছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকা, চাঁদপুর, বরিশাল, যশোরসহ দেশের বড় বড় আড়তে। তবে এবারে ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের মণ বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকায়। তবে এর আগেরদিন একই মাছ ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে জানায় মৎস্যজীবীরা। গত দুই দিনে টেকনাফ উপজেলায় দেড়শ টন ইলিশ মাছ (৩ হাজার ২৪০ মণ) জেলেদের জালে ধরা পরেছে।02

মঙ্গলবার দুপুরে সমুদ্র থেকে ইলিশবোঝাই নৌকায় নিয়ে টেকনাফ শামলাপুল ঘাটে ফিরেছে একটি নৌকা। এই নৌকায় মাঝি দায়িত্বে ছিলেন দিল আহমদ। তিনি বলেন, আমরা বেশ খুশি। মাত্র দুই দিনের মাথায় নৌকা ভর্তি ইলিশে নিয়ে ফিরেছি। সেখানে আড়তদারে উঠিয়ে দুই লাখ টাকায় মাছগুলো কিনে নেয় মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ এখলাছ।

মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ এখলাছ বলেন, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় এক দিনেই দাম কিছুটা কমেছে। দুদিন আগেও যেখানে ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি মণ ইলিশ ১৭-১৮ হাজার টাকা পাইকারি দামে বিক্রি হতো, সেখানে তা এক ধাক্কায় ১৪-১৫ হাজার টাকায় নেমে আসে। তবে এই আড়ত কেন্দ্রে কয়েকটি নৌকায় তারাও প্রত্যেক ২০-৩০ মণ মাছ নিয়ে ফিরেছেন। আরও অনেক নৌকা সাগর থেকে ফেরার পথে রয়েছে বলে জানা গেছে।

টেকনাফ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল বলেন, সাগরে যেতে প্রতিটি ট্রলারে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। এত দিন খালি হাতে ফেরত আসায় হতাশ ছিলাম, এখন খুশি। তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এই ইলিশ মাছের স্বাদ কম।

টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার বলেন, ‘গত দুই দিনে টেকনাফ উপজেলায় দেড়শ টন ইলিশ মাছ জেলেদের জালে ধরা পরেছে। তার মধ্যে একদিনে ধরা পরেছে ১২০ টন। প্রজনন সময়ে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় পরিণত বয়স হয়েছে এ মাছের, আকারও বড় হয়েছে। জোয়ার বাড়ার কারণে সাগরে মাছ ডিম ছাড়তেও উজানে আসছে। তাই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর। এভাবে ভবিষ্যতেও জাটকা ও প্রজননের সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকলে আমাদের জাতীয় উন্নয়নে আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে ইলিশ।’