আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার থেকে কক্সবাজারে থেমে থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে ভূমিধসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে বিপর্যয় বাড়তে পারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায়।
টেকনাফের শালবাগান ক্যাম্পের মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘বৃষ্টি শুরু হওয়াতে আমাদের ক্যাম্পে দুর্ভোগ বেড়েছে। এই ক্যাম্পটি পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় ভুমিধসের ভয় রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সবকিছু হারিয়ে প্রাণ বাঁচতে রাখাইন থেকে পালিয়ে এসেছি। এপারে একটি ছোট্ট ঝুপড়িঘরে ঠাঁই মিলেছে। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে ঘরের এক অংশ ভেঙে গেছে।’
টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের ডেভেলপমেন্ট কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘গত দু'দিনের অল্প বৃষ্টিতে পাহাড়ের ঢাল এবং পাদদেশে থাকা তাঁবুগুলোতে কাদা-পানি জমেছে। রোহিঙ্গাদের রান্নার কাজে সমস্যা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে এসব মানুষের কী হবে জানি না। ভারী বৃষ্টির আগেই এসব রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল হাসান বলেন, ‘বৃষ্টির পর ক্যাম্পের পরিস্থিতির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে আশ্রয় নেয় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ সরকার। তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এরও আগে তিন লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন কারণে আশ্রয় নিতে বাংলাদেশে আসায় বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের শিবিরগুলোতে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন। এদের বেশিরভাগই পাহাড় ও বন কেটে অস্থায়ী বসতি গড়ে তুলেছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ও মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জনমত সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।