নুসরাত হত্যা: আসামিদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগে আরেক ওসি কামালকে বদলি

 

ওসি কামালমাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় মূল আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টার সঙ্গে জড়িত সেসময়ের সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেনকে বদলি করা হয়েছে। তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার্সে (এপিবিএনে) বদলি করা হয়। ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) রবিউল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ওসি কামালের বদলির আদেশ পুলিশ সদর দফতর থেকে ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছে।’
“পার পেয়ে যাচ্ছেন সোনাগাজীর আরেক ওসি কামাল?” এই শিরোনামে গত ১৮ জুন বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সদর দফতর গত ২৪ জুন ওসি কামালের এই বদলির আদেশ দেন ।
প্রকাশিত সংবাদে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, নুসরাতকে যৌন হয়রানির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তবে এ হত্যা মামলায় মূল আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টার সঙ্গে জড়িত ওসি কামাল সোনাগাজী থানায় এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। নুসরাত নিহতের পর প্রথম যে হত্যা মামলাটি সাজানো হয়, তাতে ওসি মোয়াজ্জেমের সঙ্গে যোগসাজশে মামলার বাদীর স্বাক্ষর জাল করে মূল আসামিদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই ওসির বিরুদ্ধে। তখন মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার দিন মূল আসামিদের বাদ দিয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচ নিরপরাধ ব্যক্তিকে ধরে এনে থানায় নির্যাতনের অভিযোগও আছে কামালের বিরুদ্ধে।
মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনার দুই দিন পর (৮ এপ্রিল) ভোরে সোনাগাজী মডেল থানায় ওসি কামাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ফেনী পুলিশের পক্ষ থেকে একটি এজাহারের খসড়া তৈরি করে আমার কছে আনেন। সেই খসড়া এজাহারে আমি মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাকে প্রধান আসামি করে আট আসামির নাম পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করে বাকিদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওইদিন বিকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বের হয়, পুলিশ মুখোশধারী চারজন এবং তাদের অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের আসামি করে আমাকে বাদী দেখিয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় ওসি কামালসহ আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বদলি বা পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত নামে যেন তারা তাদের অপরাধ না পায় তার জন্য সরকার ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’