কোরবানিতে পশু সংকট নেই চট্টগ্রামে





কোরবানির পশু (ফাইল ছবি)ঈদুল আজহার বাকি আর ১৫ দিন। এর মধ্যে কোরবানির পশু সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু-ছাগল সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী খামারে মজুত করছেন। তাছাড়া স্থানীয় খামারিরাও এবার বেশি সংখ্যক পশু প্রস্তুত করেছেন। তাই চট্টগ্রামে এবার কোরবানি পশুর সংকট হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী, খামারি ও জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।


জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রেয়াজুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চাহিদা সাত লাখ ২০ হাজার ৯৫৭টি। এর মধ্যে নগরী ও জেলার ১৪টি উপজেলায় মোট সাত হাজার ৫০টি খামারে ছয় লাখ ১০ হাজার ২১৯টি পশু স্থানীয় খামারে মজুত আছে। অবশিষ্ট এক লাখ ১০ হাজার পশু সংগ্রহ করতে হবে। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’
রেয়াজুল হক বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পশু রয়েছে। এসব পশুর একটি বড় অংশ চট্টগ্রামের বাজারে চলে আসবে। গতবারের চেয়ে এবার চট্টগ্রামে খামারির সংখ্যা বেড়েছে। তাই এবার চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর সংকট হবে না।’
কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তা না থাকলেও পশুখাদ্য নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন চট্টগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকার পশুপালনকারীরা। বন্যার কারণে চারণভূমি, অনাবাদি জমি ও চাষের ঘাস নষ্ট হয়ে যাওয়ায়, শুকনো খাদ্যের ওপর নির্ভর করতে হতে হচ্ছে। অন্যদিকে, বাজারে পশুখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ মে পর্যন্ত নগরীর ২৩৪টি খামার ও উপজেলার তিন হাজার ৭৯৪টি খামারে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৭১টি ষাঁড়, ৯১ হাজার ২১১টি বলদ, ১৫ হাজার ৯৮৮টি গাভি, ৩৯ হাজার ৬০৭টি মহিষ, ৯২ হাজার ২০৯টি ছাগল ও ৩০ হাজার ৮৮৭টি ভেড়াসহ মোট পাঁচ লাখ ১৫ হাজার ৫৭১টি কোরবানির পশু মোটাতাজা করা হয়। এরপর গত দুই মাসে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। গত ১ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত আরও তিন হাজার ২২টি নতুন খামার গড়ে উঠেছে। এতে ৯৪ হাজার ৬৮৮টি পশু মোটাতাজা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে চট্টগ্রামে ছয় লাখ ১০ হাজার ২১৯টি কোরবানির পশু সংগ্রহে আছে।
গতবারের তুলনায় এবার চট্টগ্রামে কোরবানি পশুর সংগ্রহ বেশি আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গারাহ অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলিফ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার চট্টগ্রামে খামারি বেড়েছে। তাই এবার কুষ্টিয়া, রাজশাহী থেকে গরু না এলেও তেমন একটা সমস্যা হবে না।’ তিনি বলেন, গতবার আমার খামারে ৭০টি গরু লালন পালন করা হয়েছিল। এবার সেখানে ২০০টি গরু লালন পালন করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আলিফ চৌধুরী বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার গরুর দাম সামান্য বাড়তে পারে। এবার দুই থেকে আড়াই মণের গরু ৫৫ থেকে ৬০ হাজার। তিন-চার মণ ওজনের গরু ৯০ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হতে পারে।’
প্রসঙ্গত, গতবার চট্টগ্রামে ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৪১৫টি কোরবানির পশু জবাই করা হয়েছিল। এর মধ্যে চার লাখ ৫১ হাজার ৪২৩টি গরু, তিন হাজার ৩০৯টি মহিষ, দুই লাখ ৬৮০টি ছাগল ছিল।