হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই ‘উধাও’ মা!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল (ছবি– সংগৃহীত)ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে জন্ম নেয় ছেলেশিশুটি। গত রবিবার (১৩ অক্টোবর) ভোররাত পর্যন্ত সে মায়ের সঙ্গে গাইনি বিভাগে ছিল। তবে এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তার মাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের এক সেবিকার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

কী কারণে নবজাতকটিকে তার মা রেখে চলে গেলেন তা নিশ্চিত হতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা ওই নারীর নামটা পর্যন্ত জানে না। তবে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত রবিবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে নবজাতকটির জন্ম দেন ওই নারী। এর ঘণ্টাখানেক পর থেকে তার মায়ের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত নবজাতকটির মা আর ফিরে আসেননি। পরে হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা ও সমাজসেবা অধিদফতরকে জানানো হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত রবিবার রাত ১১টার দিকে কে বা কারা প্রসূতি এক নারীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রেখে চলে যায়। হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোতাহের হোসেন সেন্টু ওই নারীকে দেখে গাইনি বিভাগে ভর্তি এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ওই দিন রাতে ওই নারী এক ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।

মোতাহের হোসেন সেন্টু বলেন, ‘গত রবিবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই শিশুর জন্ম হয়। সকাল থেকে ওই নারী উধাও হয়ে যান।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীকে দেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মনে হয়েছিল। তবে এমন কাজ করবেন, ভাবতে পারিনি।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘জন্মের পর থেকে অসুস্থ শিশুটিকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।’

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ইকবাল হোসেনের তত্ত্বাবধানে আছে শিশুটি। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ডা. ইকবাল হোসেন শিশুটিকে দেখার পর বলেন, ‘এখন শিশুটি অনেকটাই সুস্থ। বর্তমানে শিশুটিকে সেবিকা কুলসুম বেগম মায়ের মমতায় রেখেছেন।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা সদর মডেল থানা ও সমাজসেবা অধিদফতরকে অবহিত করেছি। পুলিশ এবং সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তারা হাসপাতালে এসে শিশুটিকে দেখে গেছেন। যদি কেউ শিশুটিকে নেওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন, তাহলে সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এসআই নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটির দেখাশোনা করছি। নবজাতকের স্বজনদের কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। শিশুটির ঠিকানা কোথায় হবে, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’