খাতুনগঞ্জের হাজী আল হাকিম বাণিজ্যালয় আড়তের সামনে পড়ে আছে ৩০ থেকে ৪০ বস্তা পচা পেঁয়াজ। ওই আড়তের মেঝেতেও পড়ে অসংখ্য পচা পেঁয়াজের বস্তা। পেঁয়াজগুলো গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) টেকনাফ থেকে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন আড়তের ম্যানেজার মো. সিরাজুল হক। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘কাল টেকনাফ থেকে আমাদের আড়তে এক ট্রাক পেঁয়াজ আনা হয়। পেঁয়াজগুলোর ৬০ শতাংশই পচা। মিয়ানমার থেকে ট্রলারে করে আনার সময় পেঁয়াজগুলো পচে গেছে বলে তিনি দাবি করেন।
শাহাদাত অ্যান্ড ব্রাদার্স, খাজা ট্রেডার্সসহ আরও কয়েকটি আড়তের সামনেও একই অবস্থা। ওইসব আড়তের সামনেও পড়ে আছে পচা পেঁয়াজ।
খাজা ট্রেডার্সের মালিক ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মিয়ানমারের পেঁয়াজের স্টক শেষ পর্যায়ে। চাহিদা থাকায় মিয়ানমার এখন তুলনামূলক খারাপ পেঁয়াজগুলোও রফতানি করে দিচ্ছে। এ কারণে এখন টেকনাফ থেকে যেসব পেঁয়াজ আসছে এগুলোর প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশই আনার পথে পচে যাচ্ছে।’
খাইরুল বাশার নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বড় ব্যবসায়ীদের আড়তে পচে যাচ্ছে পেঁয়াজ। বেশি দামের কারণে কিনতে পারিনি আজ।
নগরীর জামালখান এলাকার বাসিন্দা ফজলুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা পেঁয়াজ পাচ্ছি না। অন্যদিকে আড়তদাররা পেঁয়াজ মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। মজুত রাখায় ওইসব পেঁয়াজ এখন পচে যাচ্ছে। টেলিভিশন ও পত্রিকায় দেখতেছি আড়তদাররা বস্তায় বস্তায় পচা পেঁয়াজ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দিচ্ছেন।’
তবে গণমাধ্যমে আসা এই তথ্যটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনও খবর আমার কাছে নেই। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকার ময়লার ভাগাড়ে পচা পেঁয়াজের বস্তা ফেলে যাচ্ছেন আড়ত শ্রমিকরা। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মচারীরা সেগুলো পরিষ্কার করে ফেলে দিচ্ছেন।’
শুক্রবার খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকা থেকে কী পরিমাণ পচা পেঁয়াজের বস্তা অপসারণ করা হয়েছে জানতে চাইলে শফিকুল মান্নান বলেন, তেমন বেশি না। আমি যতদূর জেনেছি দেড়শ’ থেকে দুইশ’ বস্তার মতো হবে। কর্ণফুলী নদীর পাড়ে পচা পেঁয়াজ ফেলে দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
তখন এই ঘাটে কী পরিমাণ পেঁয়াজ দেখতে পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৫ থেকে ২০ বস্তার বেশি হবে না। এরপরে কেউ পচা পেঁয়াজ ফেলতে এসেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর কাউকে পেঁয়াজ ফেলতে আসতে দেখিনি।