জানা যায়, গত ২৫ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে প্রয়োজনীয় মালামাল, কাঁচামাল, মাছ ও ওষুধের দোকান ছাড়া কক্সবাজারের সব দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এর দুই একদিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় গণপরিবহনসহ ছোট বড় যানবাহন। হাতে গোনা কয়েকটি রিকশা, টমটম চলাচল করলেও শহর জুড়ে নেমে আসে নীরবতা। পরে গত ৮ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে জেলার ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পও লকডাউন করা হয়। সেই থেকে কার্যত কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। কিন্তু, গত দুই দিন ধরে শহরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। সেই আগের মতো নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি। কাজেই কক্সবাজার শহরের অনেককাংশে ফিরে এসেছে সেই পুরনো চেহারা।
গত দুই দিন ধরে শহরের নিম্ন আয়ের মানুষেরা ঘরের বাইরে বের হতে শুরু করেছেন। চা, পান, সিগারেট, বস্ত্র ও জুতা, ম্যাট্রেসের দোকান। এমনকি কামারের দোকানও খুলতে শুরু করেছে। রাস্তায় বেড়েছে রিকশা, টমটম ও সিএনজি চলাচল। নির্মাণ শ্রমিকদের অনেকেই যোগ দিয়েছেন কাজে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই লকডাউনের মধ্যে রাস্তায় হাজারো মানুষের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। তবে দূরপাল্লার যানবাহন এখনও বন্ধ রয়েছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির কক্সবাজার শাখার সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, 'সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১০ মে এর পর দোকান খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যেসব ব্যবসায়ী এবং দোকান কর্মচারী জেলা শহরের বাইরে রয়েছেন, তাদের কক্সবাজার শহরে আসতে নিষেধ করেছি। যদি অমান্য করে কেউ চলে আসেন, তবে প্রশাসনের সহযোগিতায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসার বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে দেশের অন্যান্য এলাকার মতো কক্সবাজারেও শিথিল করা হয়েছে লকডাউন। তবে বরাবরের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। রয়েছে জেলা প্রশাসনের নজরদারিও।'
জানতে চাইলে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজারে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭২ জন। প্রতিদিনই বাড়ছে এ সংখ্যা। এ অবস্থায় ঘরে থাকাই নিরাপদ। যদি কোনও কারণে ঘরের বাইরে যেতেই হয়, তাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যেতে হবে।'