৩০২ কেজি ওজনের মানুষটি আর নেই

অস্বাভাবিক ওজনের কারণে এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে জরুরি বিভাগে আনা সম্ভব হয়নি, হাসপাতালের গেটে দেওয়া হয় শ্বাসকষ্ট আর হৃদরোগের চিকিৎসা! আর তাতে শেষবেলায় একরকম বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন ৩০২ কেজি ওজনের মাখন মিয়া।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।

মাখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলের মিলন মিয়ার ছেলে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, মাখন মিয়ার ওজন প্রথমে স্বাভাবিক থাকলেও পরে ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। মৃত্যুকালে তার ওজন দাঁড়ায় ৩০২ কেজি। অস্বাভাবিক এই ওজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছিলেন মাখন। মারাত্মক অসুস্থ হওয়ায় সোমবার রাতে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে।

মাখনের পিতা মিলন মিয়া জানান, গত কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে ভুগছিল মাখন। ২০ বছর বয়স পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিকই ছিল।  তারপর হঠাৎ করে তার শারীরিক গঠন বদলাতে থাকে। সে সাথে তার শরীরের ওজনও অস্বাভাবিক বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত তার ওজন ৩০২ কেজিতে গিয়ে দাঁড়ায়। ছেলেকে সুস্থ করার জন্যে চিকিৎসাও করেছেন একাধিকবার, কিন্তু অস্বাভাবিক ওজনের কারণে ব্যাহত হচ্ছিল চিকিৎসা। ছেলের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে এখন নিঃস্ব তার পরিবার। শেষবেলায় ওষুধ কেনার পয়সাও ছিল না। ছেলে তো গেলো, এখন দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে আর্থিক দৈন্যতায় বেঁচে থাকাই কষ্টকর।

সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন মাখন মিয়ার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সোমবার রাতে মাখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা । তার ওজনের কারণে হাসপাতালের ভেতরে জরুরি বিভাগে তাকে ঢোকানো সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের গেটেই তাকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, মাখনের শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। তার বুকে ব্যথা ছিল। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।