মেয়রের প্রশ্ন, দুই যুগেও বারইপাড়া খাল খনন হয়নি কেন?

নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে বলিরহাট হয়ে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খালটি এখনও কেন খনন করা গেলো না তা জানতে চাইলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিটি করপোরেশনের টাইগারপাসের অস্থায়ী অফিসে চসিকের প্রকৌশলীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মেয়র। ওই বৈঠকে রেজাউল করিম চৌধুরী করপোরেশনের প্রকৌশলীদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী এই খালটি খননের কথা ছিল।

বৈঠকে মেয়র তার ১০০ দিনের কর্ম পরিকল্পনার পাশাপাশি নতুন নগর ভবন নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা কী তাও জানতে চান। তিনি টাইগারপাস অফিসে পার্কিং না থাকা, মূল শহরের বাইরে করপোরেশনের অফিস হওয়ায় কর্মকর্তাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে মতামত নেন।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একসময় সুনাম ছিল। এখন দুর্নাম বেশি। এই দুর্নাম ঘুচাতে হবে। তিনি প্রকৌশলীদেরকে পরস্পর দলাদলি না করে আন্তরিকভাবে সততার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন।

তিনি আরও বলেন, আমি আপনারা সবাই একটা পরিবার। কাজেই মিলেমিশে গুণগতমান বজায় থাকে ঠিকাদারদের কাছ থেকে এমন কাজ আদায় করুন। কাজের কোয়ালিটি নিশ্চিতে কোনও ছাড় দেবেন না আপনারা। এটা আমার নির্দেশ।

সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহম্মেদ,অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, আবু ছালেহ, মনিরুল হুদা, কামরুল ইসলামসহ নির্বাহী ও সহকারী উপ সহকারী প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।

মেয়রের প্রশ্নের জবাবে বারইপাড়া খাল খনন না হওয়ার বিষয়ে করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের খাতে ব্যয় প্রায় এক হাজার ১ শত ১৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ। প্রকল্পটির জিওবি বরাদ্দ ৭৫ শতাংশ খাতের প্রায় ৯১৫ কোটি টাকা ইতোমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার ৯১১ কোটি টাকা জেলা প্রশাসন তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ খাতেই ২০৮ কোটি টাকা এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৯৭ কোটি টাকা অর্থাৎ ৩০৪ কোটি টাকা সিটি করপোরেশন তহবিল থেকে ব্যয় করতে হবে। কিন্তু, বর্তমানে করপোরেশনের আর্থিক এই ব্যয়ভার বহনের সক্ষমতা নাই।

এই খালের মোট প্রক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি ৬১৫ লাখ টাকা। জিওবি ৭৫ শতাংশ ও চসিকের তহবিল হলো ২৫ শতাংশ মিলিয়ে টাকার অংকে যা দাঁড়ায় ৩১৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত। অথচ এই প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু করা যায়নি। সভায় উপস্থিত চসিকের নির্বাহী কর্মকর্তা এত বড় প্রকল্পের জন্য মোট ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা লাগবে। কিন্তু, আইনে একসঙ্গে এই পরিমাণ জমির অধিগ্রহণের টাকা ছাড়ের কোনও বিধান নাই। তাই জেলা প্রশাসন ৫ ভাগে ভাগ করেছে অধিগ্রহণের বিষয়টা। এছাড়া এলএ শাখায় মামলাও আছে।