নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরতে বললেন বাবুনগরী

নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা ধৈর্য ধারণ করুন, কোনও সংঘাতে যাবেন না। কোনও জ্বালাও পোড়াও করবেন না। হেফাজতে ইসলাম ভাঙচুর আর জ্বালাও পোড়াওতে বিশ্বাস করে না। বরং হারাম মনে করে। আপনারাও ধৈর্য ধারণ করুন।’

সোমবার (১৯ এপ্রিল) নিজ নামে খোলা (আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী) ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই নির্দেশনা দেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, শুধু দুনিয়ার হায়াত নয়, আসল হায়াত শুরু হবে মৃত্যুর পর থেকে। কবরের হায়াত, হাশরের হায়াত, আখেরাতের হায়াত, বেহেস্তের হায়াত। নিরাশ হবেন না। হতাশ হবেন না। হিম্মত, সাহস রাখুন, বালা মুসিবত বিপদের ওপর ধৈর্য ধারণ করুন। খবরদার কোনও ভাঙচুর করবেন না। জ্বালাও পোড়াও করবেন না। সংঘাতে যাবেন না।’

একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এটাতো হযরত আদম (আ.) এর যুগ থেকে চলে আসতেছে। যাদের ঈমান আকিদা বেশি মজবুত তাদের ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাও শক্ত হয়। বিপদও শক্ত আছে। নবীগণের দ্বীন ও ঈমান সবচেয়ে বেশি শক্ত ছিল, তাই নবীরা বেশি বিপদের শিকার হয়েছেন। এরপর সাহাবায়ে কেরাম, তাদের দ্বীন ও ঈমান শক্ত ছিল বিধায় তারাও নবীদের পরে বেশি বিপদের মুখোমুখি হয়েছেন। এভাবে সিলসিলা চলতে থাকবে। আমাদের মধ্যেও যাদের দ্বীন ঈমান বেশি মজবুত, যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন, তার ওপর বিপদ আসে। তারা পরীক্ষার সম্মুখীন হন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, কাউকে ক্ষমতায় বসানো, কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য নয় পরিষ্কার ভাষায় বলে আসতেছি। কোনও পার্টি বা দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য নয়। পরিষ্কার ভাষায় বলে আসতেছি। হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর জমিনে মোহাম্মদ রাসুল (স.) এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। কিন্তু কিছু কুচক্রীমহল নানাভাবে এসব গুজব ছড়াচ্ছে। সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা এ গুজবে কান দেবেন না।
তিনি বলেন, অনেকের সন্দেহ ‘হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য হলো অমুক অমুক দলকে ক্ষমতায় বসানো। ... নাউজুবিল্লাহ, এটি ডাহা মিথ্যা কথা। নির্জলা মিথ্যাচার।’

তিনি আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে ২০১০ সালে। এখন ২০২১ সাল, এই ১১ বছরে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না, অমুক পার্টির সাথে হেফাজতে ইসলামের সম্পর্ক ছিল। কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না।

প্রশাসন মাহে রমজানে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদেরকে, ওলামা কেরামকে, দেশের জনগণকে, তৌহিদী ছাত্র জনতাকে হয়রানি করছে উল্লেখ করে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘আমাদের যেসব নেতাকর্মী, হক্কানি আলেম, নির্দোষ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দান করুন। বড় বড় আলেম, আজিজুল হক ইসলামাবাদি, জুনায়েদ আল হাবিব, মুফতি সাখাওয়াত, মাওলানা মামুন, মামুনুল হক, মুফতি ইলিয়াস হামিদীসহ আরও অনেক বড় বড় আলেম, তৌহিদী জনতা, ছাত্র জনতা যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দিন।

তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ২০১৩ সালের মামলায় ৮/৯ বছর পর এখন গ্রেফতার করা হচ্ছে। এতদিন কোথায় ছিলেন আপনারা? আর এই ২০১৩ সালের মামলা হিসেবে যেগুলো সাজানো হয়েছে এগুলো ডাহা মিথ্যা। ২০১৩ সালের ডাহা মিথ্যা মামলায় যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরকেও মুক্তি দিন। এটাও আমাদের দাবি।