চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৬

চট্টগ্রাম নগরে চলন্ত বাসে গার্মেন্টকর্মীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে মীরসরাই থানা পুলিশ। শুক্রবার (২৫ জুন) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

গ্রেফতাররা হলেন- সীতাকুণ্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার মো. দুলালের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩), বাঁশবাড়ীয়া এলাকার মো. ইয়াছিনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (১৮), মুরাদপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন রানা (২০), উত্তর ইদিলপুর এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৩), শীবপুর এলাকার মো. সালামত উল্লাহর ছেলে মো. ইসমাঈল (৩২) এবং মীরসরাই উপজেলার মধ্যম কুরুয়া এলাকার মো. জেবল হোসেনের ছেলে মো. সাগর (২২)।

মীরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, গত ২৩ জুন (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টায় পোশাককর্মী চন্দাকে (ছদ্মনাম, ২২) তার পরিচিত সীতাকুণ্ডের চাকা পরিবহনের বাসচালক আশরাফুল ইসলাম চট্টগ্রাম নগরের অলংকার আসার জন্য বলেন। সেখান থেকে চন্দাকে আল আমিন বাসে করে সীতাকুণ্ড নিয়ে আসেন। এ সময় সীতাকুণ্ডে বাস থেকে সব যাত্রী নামিয়ে দিলেও চন্দ্রাকে তারা নামতে দেয়নি। আল আমিন ও তার সহকারী (হেলপার) শাহাদাৎ চন্দ্রাকে সীতাকুণ্ডের জুটমিল এলাকায় নিয়ে বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে তারা চন্দ্রাকে জুটমিল এলাকায় বাস নামিয়ে চলে যায়। পরে চন্দ্রা তার পূর্ব পরিচিত রায়হান উদ্দিন রানাকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানান। রানা তাকে সীতাকুণ্ড আসার জন্য বলেন। চন্দ্রা সীতাকুণ্ড আসার জন্য বাসে উঠলে ওই বাসচালক ইসমাঈল ও তার সহকারী (অজ্ঞাত) রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় তাকে আবার ধর্ষণ করে সীতাকুণ্ড ফেলে চলে যায়।

পরবর্তী সময়ে রায়হান উদ্দিন রানা সীতাকুণ্ড এসে চন্দ্রার সঙ্গে দেখা করে তার বন্ধু সাগর ও বেলালসহ তাকে সীতাকুণ্ড থেকে রাত ৪টায় মীরসরাইয়ের সাহেরখালী এলাকার বেডিবাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে চন্দ্রাকে পুনরায় ধর্ষণ করে সাগর, বেলালসহ আরও কয়েকজন। এরপর রানা ও তার সহযোগীরা চন্দ্রার কাছে থাকা নগদ দুই হাজার টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে তাকে রেখে পালিয়ে যায়। চন্দ্রা বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকালে বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে মীরসরাইয়ের নিজামপুর এলাকায় আসেন। পরবর্তী সময়ে বাসে করে সীতাকুণ্ড থানায় গিয়ে দুপুরে ধর্ষণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সর্বশেষ ঘটনা মীরসরাই থানা এলাকায় হওয়ায় সীতাকুণ্ড থানা অভিযোগটি মীরসরাই থানায় হস্তান্তর করে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মীরসরাই থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করেন চন্দ্রা। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সীতাকুণ্ড উপজেলার জোড়াআমতল, কুমিরা, সীতাকুণ্ড পৌরসভা ও মীরসরাইয়ের নিজামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় আসামিকে গ্রেফতার করে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় মীরসরাই থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করেন।

আসামিদের আটকের বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মীরসরাই) সার্কেল, সহকারী পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড) সার্কেল, মীরসরাই থানা ও সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।