সিনহা হত্যা মামলা: দ্বিতীয় দফায় সাক্ষী দেবেন যারা 

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে টেকনাফের মিনা বাজারের কাজি ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলীকে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, রবিবার আদালতে উপস্থিত হয়ে যারা সাক্ষ্য দিবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফের মিনা বাজারের কাজি ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী, টেকনাফের শামলাপুরের ডা. মৃত ফজল করিমের ছেলে আবদুল হামিদ, শামলাপুরের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. ইউনুস এবং শামলাপুরের মৃত লাল মিয়ার ছেলে ফিরোজ আহমদ।

এছাড়া, আগামী ৬ সেপ্টেম্বর চার্জশিটের ৭ থেকে ১০ নম্বর সাক্ষী, ৭ সেপ্টেম্বর ১১ থেকে ১৩ নম্বর সাক্ষী এবং ৮ সেপ্টেম্বর ১৪ নম্বর সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির থাকার জন্য সমন জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ অন্য আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে, ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিনদিন মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও বাদী শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। প্রথমদিনের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতের কাঠগড়ায় হাঁটু গেড়ে বসে মোবাইলফোনে কথা বলেন ওসি প্রদীপ। তার কথা বলার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে।  

গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন র‌্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।