বাজারে ইলিশ পাওয়া যাবে আর মাত্র চার দিন। ৩ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত বাজারে কেনাবেচা হবে ইলিশ। এরপর ইলিশ কেনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২২ দিন। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার আগে গত চার দিন ধরে দেশে ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার চাঁদপুরের বড়স্টেশন মাছবাজারে কমে গেছে আমদানি। এ ছাড়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে রফতানি হচ্ছে ইলিশ। এতে গত সপ্তাহের তুলনায় গড়ে কেজি প্রতি আরও ১শ’ টাকা দাম বেড়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বহরিয়া এলাকার জেলে হাসান খান ও রফিক বেপারি বলেন, ‘আমরা এতদিন কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পাইনি। যে পরিমাণ ইলিশ পেয়েছি তা দিয়ে আমাদের খরচা ওঠাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। এখন চাঁদপুর অঞ্চলে ইলিশ আসবে। কিন্তু আমরা তা ধরতে নদীতে জাল ফেলতে পারবো না। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন পরে আর নদীতে তেমন ইলিশ থাকে না। ডিম ছেড়ে সেগুলো আবার সাগর মোহনা অঞ্চলে চলে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমদানি কম হলে দাম তো স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। এ ছাড়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ যাচ্ছে। দাম বেশি হওয়ার সেটিও একটি কারণ।’
চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছ বাজারের আড়তদার ইমান হোসেন জানান, উপকূলীয় এলাকার এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা, ৮শ’ গ্রাম থেকে ৯শ’ গ্রামের ইলিশ এক হাজার টাকা, ৬শ’ থেকে ৭শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, এর চেয়ে ছোটগুলো বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা। এ ছাড়া চাঁদপুর নদী অঞ্চলের ইলিশের দাম কেজি প্রতি আরও ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি।
তিনি জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় গত তিন দিন ধরে ইলিশের দাম প্রতি মণে বেড়েছে তিন থেকে চার হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আশ্বিন মাসে পূর্ণিমার আগে ও পরে মিলিয়ে ১১ দিন মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তখন থেকেই এর সুফল দেখতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। বাড়তে শুরু করে ইলিশের উৎপাদন। তখন তারা গবেষণায় দেখতে পান, শুধু পূর্ণিমায় নয়, এই সময়ের অমাবস্যাতেও ইলিশ ডিম ছাড়ে। পরে পূর্ণিমার সঙ্গে অমাবস্যা মিলিয়ে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শুরু হয়। গত অর্থবছরে দেশে ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরিত হয়েছে।