আমরা কি মরে গেছি, প্রশ্ন আ স ম রবের

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধে সরকারকে রাতে ভোট ডাকাতি ও দলীয় শাসন বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। তিনি বলেছেন, ‘দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করতে হবে। আসুন আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও দল-মত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। সারাবিশ্বে আজ আমাদের রাষ্ট্রের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষা করো। কেন আমরা কি মরে গেছি, কোথায় আমরা, কোথায় আমাদের মানুষ? এই জন্য তো মুক্তিযুদ্ধ করিনি।’

কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড় পূজামণ্ডপে সংঘটিত অপ্রীতিকর তাণ্ডবের ঘটনাস্থল সরজমিন বুধবার (২০ অক্টোবর) পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

‘বাইরের থেকে কেউ বাংলাদেশের এই ঘটনাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা এবং নাক গলাবেন না’- এ বক্তব্য দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি এই কথাটাকে কাজে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করুন।’

জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘প্রতিবছর পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। ফয়দা লোটার জন্য বিশেষ একটি গোষ্ঠী ওত পেতে থাকে। সরকারও ফায়দা নেওয়ার জন্য মন্দির, গির্জায় সুরক্ষা দেয় না। কারণ জনগণ আর দলীয় সরকার চায় না। স্বাধীনতার পর দলীয় সরকারের যে কী পরিণতি হতে পারে, আজকের হিন্দুদের মন্দিরে ও বাড়িঘরে হামলাই এর প্রমাণ। মানুষ মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের সরকার চায়, দলীয় সরকার নয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা রাতে ভোট ডাকাতি করে, তাদের জনগণের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা থাকে না। আমরা জঙ্গিদের লিফলেট খুঁজে পাই। আর এখানে হিন্দুদের মন্দিরে ও বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে। রংপুরের পীরগঞ্জে জেলে পাড়ায় বাড়ি পুড়ে দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য, জায়গা দখল করে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া। কারও ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দলীয়, পারিবারিক স্বার্থ রক্ষা করার জন্য হাজার বছর আগে বাঙালি জাতীর সৃষ্টি হয়নি। এই ধর্মীয় সহিংসতা ক্ষমার অযোগ্য। অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’

নানুয়ার দীঘির পূজামণ্ডপে সংঘটিত তাণ্ডবের ঘটনাস্থল থেকে পরে তিনি শহরের কাপড়িয়াপট্টি চাঁন্দমনি রক্ষাকালী মন্দির পরিদর্শনে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল, বিকাশ চন্দ্র সাহা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সা কা ম আনিছুর রহমান প্রমুখ।