উদ্ধারকর্মীরা চলে গেলেও ২ সন্তানের অপেক্ষায় নদীর পাড়ে মা

বান্দরবা‌নের তারাছার বাধরা ঝর্ণার পা‌শে সাঙ্গু নদীতে শুক্রবার (২৪ ‌ডি‌সেম্বর) ৩টার দি‌কে গোসল করতে নামেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে আসা ১০ পর্যটকের আট জন। এ সময় নদীর স্রোতে ভেসে যান তারা সবাই। ছয় জনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করলেও এখন সন্ধান মেলেনি দুই ভাইবোনের।

নিখোঁজ দুজন হলেন- মো. আহনাফ আকিব (২২) ও আদ‌নিন (১৬)। এদিকে, উদ্ধার ছয় জনের একজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছে। তার নাম- মা‌রিয়া ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বান্দরবা‌ন থেকে ১০ পর্যটক নৌকা‌তে ক‌রে সাঙ্গু নদীপথে বেতছড়ায় বেড়া‌তে আসেন। এ সময় ‌বেতছড়ার বাধরা ঝর্ণার পাশে নদী‌তে গোসল কর‌তে নামলে ওই আট জনই নদীর স্রোতে ভেসে যায়। হাসপাতালে আনার পথে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।

ফতুল্লা থেকে বান্দরবান বেড়াতে যাওয়া ১০ পর্যটক

ঘটনার পরপরই পু‌লিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিখোঁজ ভাইবোনের উদ্ধারে কাজ শুরু ক‌রে। দুর্গম এলাকা ও পানি অত্যধিক ঠান্ডা হওয়ায় রাত ৮টার পর উদ্ধার কাজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এদিকে সন্তানদের নিখোঁজের খবরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ছুটে যান মা সাইদা শিউলী ও মামা শামীম। উদ্ধারকাজ বন্ধ করে উদ্ধারকর্মীরা চলে গেলেও ঘটনাস্থল নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছেন মা-মামা।

নিখোঁজ আহনাফ ও আদ‌নিনের খালা‌তো ভাই ব‌্যবসায়ী আবদুল্লাহ জানান, বুধবার (২২ ডি‌সেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে খালা‌তো ও মামাতো ভাইবোনসহ তারা ১০ জন বান্দরবান আসেন। সেদিন সকালে তারা বান্দরবা‌নের হো‌টেল দ্য প‌্যারাডাইস এ ওঠেন। গত দুদিন ধরে নীলাচল, মেঘলা, নীল‌গি‌রিসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র চষে বেড়িয়েছেন তারা। শুক্রবার রাতের বাসেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তাই সকালে নৌকা ভ্রমণে বের হন।

হো‌টেল দ্য প‌্যারাডাইসের ম্যানেজার চম্পক চক্রবর্তী বলেন, ‘এ ১০ পর্যটক বুধবার সকালে হো‌টেলে অবস্থান নেয়। তারা দুদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। আজ রাতের বাসে তা‌দের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। এরই মধ্যে এক‌টি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। বিষয়‌টি আসলেই মর্মান্তিক।

ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মী প্রদীপ ত্রিপুরা বলেন, ‘নদীর পানি অতিরিক্ত ঠান্ডা হওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ বন্ধ আছে। শনিবার সকাল ৭টা বা ৮টার মধ্যে আবার উদ্ধার কাজ শুরু হবে।’