বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের তথ্যপ্রমাণ সরকারের কাছে আছে: তথ্যমন্ত্রী

দেশের বিরুদ্ধে বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ সরকারের কাছে আছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘নয়াপল্টন অফিসের ঠিকানা দিয়ে তারা লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এ কাজের জন্য কীভাবে অর্থ বাংলাদেশ থেকে গেলো সেগুলো তদন্ত ও দেখভাল সরকারের যে সমস্ত বিভাগ ও দফতর করে- তাদেরকে সেগুলো জানানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম চিশতি, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী শাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মনওয়ার রিয়াদ মুন্নাসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে ১২টি মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র‌্যাবকে বাদ দিতে চিঠি লিখেছে সেখানে দুই-তিনটি ছাড়া বাকিগুলো নামসর্বস্ব। এগুলোর নাম আমরাও আগে শুনিনি, আপনারাও শুনেছেন কি-না আমার জানা নেই। এই চিঠি দিয়েছে গত বছরের ৮ নভেম্বর। দুই মাসের বেশি সময় পার হওয়ার পর এটি হঠাৎ মিডিয়ায় কেন নিয়ে এলো? এটির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।’

এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপি ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে, তাদের অবৈধ অর্থ লবিস্ট ফার্মে লগ্নি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে জনগণের ওপর বিএনপির কোনও আস্থা নেই। তাই তারা ষড়যন্ত্রের পথটাই বেছে নিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ। একটি রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে যখন এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে, তারা দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি-না সেই প্রশ্নই এসে দাঁড়ায়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন বিএনপি নিশ্চুপ ছিল। কারণ কেউ যখন অপরাধ করে, তার অপকর্মগুলো যখন প্রকাশ পায়, তখন কী বলবে- খেই হারিয়ে ফেলে।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার জন্য এফবিআইয়ের এজেন্ট ভাড়া করেছিল। এফবিআইয়ের সেই এজেন্টকে পরে যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলি এজন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, সে বৈঠকের ছবিসহ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপি-জামায়াত লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। বিএনপি কি এগুলো অস্বীকার করতে পারবে?’

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে আইন করা হচ্ছে সেটা জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে না- টিআইবির এমন বক্তব্যের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন এবং গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংলাপে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল একটা আইন করার কথা বলেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার একটি আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে, পুরো বিষয়টা হচ্ছে রাজনৈতিক। টিআইবি কাজ করে দুর্নীতি নিয়ে, এটির সঙ্গে তো দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’