শিপিং করপোরেশনের ভুল সিদ্ধান্তে হাদিসুরের মৃত্যু, দাবি বিএমএমওএর

যুদ্ধকবলিত ও জলদস্যুপ্রবণ এলাকায় জাহাজ গমনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান রয়েছে। অথচ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) পক্ষ থেকে জাহাজটিকে যুদ্ধকবলিত এলাকায় (ইউক্রেন) গমনের অনুমতি দেওয়া হয়। ভুল সিদ্ধান্তে বিএসসির জাহাজ ‌‘বাংলার সমৃদ্ধি’র মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের মৃত্যুর মতো করুণ পরিস্থিতি দেখতে হয়েছে।

শুক্রবার (৪ মার্চ) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ এই দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএমওএ’র সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের গাফিলতিতে হাদিসুরের মৃত্যু হয়েছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিএমএমওএ’র দুই জন প্রতিনিধিসহ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। সেই সঙ্গে হাদিসুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় বীর ঘোষণারও দাবি জানিয়েছে বিএমএমওএ।

আরও পড়ুন: বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না আরিফের

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনকে যুদ্ধকবলিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দেয় জয়েন্ট ওয়ার কমিটি। ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ইউক্রেনের বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায় ২২ ফেব্রুয়ারি। যুদ্ধকবলিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরও সেখানে জাহাজটি পাঠানোর সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া জাহাজটি আটকে যাওয়ার পর নাবিকদের দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জাহাজ পরিচালনায় বিএসসি’র সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারণেই নাবিকদের এমন দুর্দশার মুখে পড়তে হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জীবিত ২৮ নাবিককে সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানোর পাশাপাশি পুরস্কার দেওয়ারও দাবি জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এতে বিএমএমওএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম জিলানি ও মো. ইফতেখার আলম উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। ওই দিনই দেশটিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। পরে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে জাহাজে আটকা পড়েন ক্যাপ্টেন জি এম নুর ই আলম, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকসহ ২৯ বাংলাদেশি নাবিক। 

ইউক্রেনে হামলা শুরুর সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজটিতে গোলার আঘাতের ঘটনা ঘটে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি জাহাজটি থেকে নাবিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাহাজটিতে ২৮ বাংলাদেশি নাবিক ও ১ নাবিকের লাশ ছিল।