নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকালো স্কুলছাত্রী

নিজেই নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী। সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর ঘটনাটি ঘটে।

জানা গেছে, ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তারা পাঁচ বোন এক ভাই। বাবা রাজমিস্ত্রী। অভাব অনটনের সংসার। তাই তৃতীয় মেয়ের বিয়ে দিতে পাত্র ঠিক করেছেন। পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। বুধবার বিয়ের দিন ধার্য ছিল। তবে এই বয়সে বিয়ে করবে না ওই ছাত্রী।

সকাল ১০টায় চলে যায় নিজ স্কুলে। বিষয়টি জানায় স্কুলের অধ্যক্ষ আবদুল মান্নানকে। অধ্যক্ষ স্থানীয় ইউপি সদস্য খায়েরুল ইসলাম খায়েরকে জানান। তারা দুই জনে মিলে ওই ছাত্রীর বাবাকে বুঝিয়ে বিয়েটা বন্ধ করেন। 

অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান বলেন, ‘মেয়েটার বিয়ের বয়স হয়নি। এই ছোট মেয়েটার চিন্তা দেখে আমি বিস্মিত হয় গেছি। আমি তাকে বলেছি, তার বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করবো। পরে তার বাবার কাছে বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছি। তার লেখাপড়ার জন্য বই, খাতা, কলমসহ প্রাতিষ্ঠানিক সব খরচ আমি বহন করবো। তখন মেয়ের বাবা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন।’

ইউপি সদস্য খায়েরুল ইসলাম খায়ের বলেন, ‘খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যাই। আসলেই তাদের পরিবার অভাব অনটনে আছে। আমি তার বাবাকে বলেছি, অধ্যক্ষ সাহেব লেখাপড়ার খরচ চালাবেন। আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল ডালের ব্যবস্থা করবো। আপনি বিয়ে বন্ধ করেন। তিনি আমাদের কথা রেখেছেন।’

ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘দুই মেয়েরে বিয়ে দিছি। অভাবের সংসারে এবার তৃতীয় মেয়েরেও বিয়ে দিতে দিন তারিখ ঠিক করছি। তবে মেম্বার ও স্কুলের হেড মাস্টারের কথা হুইন্না বিয়াডা বন্ধ করছি।’

ওই ছাত্রী বলে, ‘আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই। বাবা বলছে, এখন বিয়ে বন্ধ। আমি খুবই খুশি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’