অবৈধ সম্পদ অর্জন: প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে আরও ২ জনের সাক্ষী 

অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় আসামি সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে আরও দুই জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ পর্যন্ত মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ উপস্থিত থাকলেও শুরু থেকে পলাতক আছেন তার স্ত্রী চুমকি কারণ।

বুধবার (১১ মে) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদের আদালতে ওই দুই সাক্ষী নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। সাক্ষ্য দেওয়া দু’জন হলেন- চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তসলিমা আকতার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ডাটা এন্ট্রি অপারেটর শাহাদাত হোসেন। ২৩ মে এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। 

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় আদালতে আরও দুই জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে মোট ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

মামলায় প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে গত ৪ এপ্রিল প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এর আগে মামলায় উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন প্রদীপ, কিন্তু আদালত আবেদন নাকচ করে দেন। এ কারণে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ হলেও জেরা শুরু হয় ৪ এপ্রিল থেকে। তবে প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চালু ছিল। চুমকি শুরু থেকেই এ মামলায় পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

২০২০ সালের ২৩ আগস্ট প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২-এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন এ মামলা করেন। মামলায় তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২১ সালের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রদীপের স্ত্রীর নামে চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি কার, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব ও কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। চুমকির চার কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল। যার মধ্যে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় দুই কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার। বাকি দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকা অবৈধ সম্পদ বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে দুদক। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদ।