ভারতে বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যা, মরদেহ দিলো ৩ দিন পর

ভারতের ত্রিপুরায় ডালিম মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যার তিন দিন পর মরদেহ ফেরত দিয়েছে দেশটির পুলিশ। সোমবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-ত্রিপুরার আগরতলা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহত বাংলাদেশি ডালিম মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সীমান্তবর্তী গ্রাম বায়েক ইউনিয়নের মাদলা গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে।

এ সময় ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ত্রিপুরা রাজ্যের একটি স্কুল থেকে শনিবার (১১ জুন) সকালে এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। এ সময় স্থানীয়রা তাদের চোর সন্দেহ করে ধাওয়া করে ডালিমকে ধরে ফেলেন এবং ঘটনাস্থলে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় জহিরুল ইসলাম নামে অপর এক বাংলাদেশি যুবক পিটুনিতে গুরুতর আহত হন। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে জহিরুলকে টাকারজলা থানা পুলিশ জনরোষের কবল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’

নিহত ডালিমের বাবা মোহন মিয়া দাবি করেন, ‘মাদলা গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুল বেশ কিছুদিন ধরে ভারতে অবস্থান করছে। গত ১০ জুন শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলের ভাই জহিরুলসহ অন্যরা ডালিমকে ভারতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। শিমুলের স্ত্রীর সঙ্গে ডালিমের প্রেম চলছিল। পারিবারিকভাবে বিষয়টি আপস-মীমাংসা হলেও এর জেরেই শিমুল ও তার লোকজন ডালিমকে হত্যা করে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কসবা উপজেলার ডালিম মিয়া, জহিরুল, সাইফুল ইসলাম ও হৃদয় মিয়াসহ (২৬) কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে শুক্রবার রাতে কসবা সীমান্তপথে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুলতানপুর ৬০ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক আহসান উল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশি যুবক ওখানে কীভাবে গেছেন এবং নিহত হয়েছেন সে বিষয়টি আমরা এখনও স্পষ্ট নই। তবে দুই দেশের পুলিশ এবং বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে মধ্যরাতে আখাউড়া আইসিপি দিয়ে বাংলাদেশে মরদেহ প্রবেশ করেছে।’

আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু হত্যাকাণ্ড ভারতে ঘটেছে সুতরাং ভুক্তভোগী পরিবার এ বিষয়ে বিচার চাইলে ভারতের আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। এই ঘটনায় ভারতের স্থানীয় থানায় একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর দুই দেশের পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।’