ইসলাম ও মওদুদীবাদ এক নয়: শিক্ষা উপমন্ত্রী

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটি গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি ছিল। তারা ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তাদের অনেকে ইসলামকে ব্যবহার করে মনে সংকীর্ণতার চাষ করেছে। অথচ ইসলাম সহনশীলতার চর্চা
করতে শিক্ষা দেয়। বর্তমানে যাদের দিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন হয়েছে তারা অনেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ক্যাম্পাসে ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলাম ও নৈতিকতার শিক্ষা দেয়। তবে ইসলাম ও মওদুদীবাদ এক নয়। মওদুদীবাদ সংকীর্ণতা ও অস্থিতিশীলতার শিক্ষা দেয়। পাকিস্তান আমলে ইসলাম ও রাজনীতিকে এক করা হয়েছিল। যার কারণে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এই অস্থিতিশীলতা থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মহীনতা এক নয়। বর্তমান সরকার ইসলামের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের মর্যাদা দিয়েছে এই সরকার। সেখান থেকে পাস করে অনেকে দক্ষতা না থাকার কারণে ভালো চাকরি করতে পারছে না। তাই তাদের দক্ষতা বাড়াতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

উপমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে সারা দেশে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশে পাঠদান চলে।’ 

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—ইমেরিটাস অধ্যাপক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আইনুন নিশাত। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী এমপি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দ।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মছরুরুল মওলা, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ ও ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শাকের আলম শওক, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আকতার সাঈদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনে ১৫ হাজার ৩৬১ শিক্ষার্থীর মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ৯ হাজার ৪৫৯ ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঁচ হাজার ৯০২ জন। চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক দেওয়া হয় ৩৬ শিক্ষার্থীকে। এছাড়া ১৩৭ শিক্ষার্থীকে ভাইস চ্যান্সেলর পদক দেওয়া হয়।