৯৯৯-এ কল করে ট্রলারডুবির খবর দেয় রোহিঙ্গা কিশোর

অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ট্রলারডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত ‍উদ্ধার করা হয়েছে ৪৫ জনকে। তাদের মধ্যে একজন আবু আনসার (১৫)। ট্রলারডুবির আগ ‍মুহূর্তে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশে খবর দেয় এই রোহিঙ্গা কিশোর। তারপর দ্রুত এসে উদ্ধার কাজ শুরু করেন কোস্ট গার্ডের সদস্যরা।

আবু আনসারের ভাষ্যমতে, গত সোমবার গভীর রাতে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর জন্য টেকনাফের বাহারছড়ার নোয়াখালীপাড়া থেকে ৬০-৭০ জনকে ছোট ছোট ট্রলারে তোলে। এরপর সেখান থেকে নিয়ে এসে বড় একটি ট্রলারে তোলে দালালরা। কিছু দূর যাত্রার পর ট্রলারের তলা ফেটে পানি ঢুকতে শুরু করে। এ সময় কয়েকজন পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন। তারপর সবাই হৈ চৈ শুরু করেন।

আরও পড়ুন: সাগরে মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবি

এই অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর ৪টার পরে ৯৯৯-এ নম্বরে কল করে বাঁচার আকুতি জানায় আবু আনসার। ফোনের ওপাশ থেকে ‘কী সমস্যায় পড়েছে’ জানতে চাওয়া হয়। জবাবে এই কিশোর বলে, ‘সাগরে ট্রলার ডুবে যাচ্ছে আমাদের বাচাঁন’। লোকেশেন জানতে চাওয়া হলে অন্ধকারের কারণে বলা সম্ভব হয়নি। এরপরই ট্রলারটি ডুবে যায়। 

জীবিত উদ্ধার চার বাংলাদেশিসহ ৪৫ জনকে পুলিশে হস্তান্তর করেছে কোস্ট গার্ড

আবু আনসার জানায়, সেখান থেকে খবর পেয়ে টেকনাফ-বাহারছড়া কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। কোস্ট গার্ডের অনুসন্ধানী দল খুঁজে পাওয়ার আগে ট্রলারটি ডুবে যায়। পরে তারা ভাসমান অবস্থায় ৪৫ জনকে জীবত উদ্ধার করেন।

আরও পড়ুন: টেকনাফ উপকূলে ট্রলারডুবি, সৈকতে ভেসে এলো শিশুর লাশ

কোস্ট গার্ডের টেকনাফ স্টেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশিক আহমেদ জানান, ‘সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল রোহিঙ্গাবাহী ট্রলার। ট্রলারের তলা ফেটে পানি ঢুকতে শুরু করলে কিশোর আবু আনসার ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চেয়েছিল। এরপর আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ চালায়। এতে চার বাংলাদেশি ও ৪১ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। তাদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

ট্রলারডুবির ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোহিঙ্গাসহ ৪৫ জনকে জীবিত এবং তিন নারী ও এক শিশুকে মৃত উদ্ধার করেছেন কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। জীবিতদের মধ্যে আট জন রোহিঙ্গা নারী, ৩৩ জন পুরুষ ও চার জন বাংলাদেশি। নিহতরা হলেন- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এর তৈয়বা খাতুন (১৮), কিসমত আরা (১৭) ও ক্যাম্প-১৮ এর উম্মে সালমা (১৮)। রাতে মৃত উদ্ধার শিশুর পরিচয় জানা যায়নি।