মা-বাবাকে হারিয়ে অনিশ্চিত নুশরাত-ইশরাতের ভবিষ্যৎ

থানা আঙিনায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পড়ে আছে বাবার লাশ। পাশে আপন মনে খেলাধুলা করছে নুশরাত জাহান (৫) ও ইশরাত জাহান (৩ বছর ৬ মাস)। তারা কেউই জানে না তাদের শেষ আশ্রয়স্থল বাবাকে আর ফিরে পাবে না। এমন দৃশ্যের অবতারণায় থানা আঙিনার মানুষেরও চোখ ভিজে আসে।

রবিবার (৬ নভেম্বর) কুমিল্লার লাকসাম থানার আঙিনায় এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়।

নিহত ব্যক্তির নাম মনির গাজী। তার মা আমেনা বেগম জানান, মনির কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক। শনিবার রাতে ঢাকা থেকে ফিরে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ঘরের জানালা দিয়ে দেখা যায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহ ঝুলে আছে। পুলিশ রবিবার তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

নিহত মনিরের বড় ভাই আমির হোসেন বলেন, ‘সাড়ে তিন মাস আগে মনিরের স্ত্রী সুরমা আক্তার (২৩) দুই শিশু মেয়েকে রেখে অন্যের সঙ্গে চলে যায়। তাকে ফেরাতে মনির নানাভাবে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। মনিরের স্ত্রী সুরমা আমাদের এলাকার মিজান কবিরাজকে জানায় যে মনিরের মৃত্যু হয়েছে। মিজান কবিরাজ এ খবর জানতে গেলে ঘটনা জানাজানি হয়। ধারণা করছি মনির ভিডিও কলে ছিল। স্ত্রীকে ফেরানোর জন্য ভয় দেখাতে গিয়ে সত্যিই সে আত্মহত্যা করে।’

এ ঘটনায় নিহত মনিরের মা আমেনা বেগম লাকসাম থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন।

লাকসাম থানার উপপরিদর্শক ওমর ফারুক জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।