সাড়ে ৫ বছর পর কক্সবাজারে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, বড় জমায়েতের প্রস্তুতি

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে যাচ্ছেন। ওই দিন কক্সবাজারের ইনানী-পাটোয়ারটেক সৈকতে অনুষ্ঠেয় তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নৌশক্তি প্রদর্শন মহড়ার উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনি শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৬ মে কক্সবাজারে যান শেখ হাসিনা। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময় পর আবার যাচ্ছেন। তার কক্সবাজার সফর উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর টানা সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময় পর কক্সবাজার সফরটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ায় অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার আসবেন ৭ ডিসেম্বর। ওই দিন উখিয়ার ইনানীর বঙ্গোপসাগরের পাড়ে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ায় অংশগ্রহণ করবেন। তারপর কক্সবাজার শহরের লাবণী সৈকতের পাশে অবস্থিত শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন। ইতোমধ্যে জনসভাস্থলের সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দিন-রাত চলছে প্রস্তুতির কাজ। সভাস্থলের আশে-পাশে তোরণ নির্মাণ, ব্যানার ফ্যাস্টুন দেখা যাচ্ছে সপ্তাহখানেক আগে থেকে।

কক্সবাজার-২

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর এবারের জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দেশের অন্য এলাকার চেয়ে কক্সবাজারে বেশি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কক্সবাজারে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্প, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেরিন ড্রাইভ প্রশস্তকরণ, সাবমেরিনের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ, সাবরাং এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন, মহেশখালী এল এম জি টার্মিনালসহ অসংখ্য মেগা প্রকল্প।

তিনি আরও জানান, কেবল সভাস্থল শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম নয়, এর আশপাশে পুরো কক্সবাজার শহর জনারণ্য হবে। এবারের জনসভায় সাড়ে চার লাখ মানুষের জমায়েত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেতরে আড়াই লাখের বেশি মানুষের জায়গা আচে। এর আগে সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, বাহারছড়ার মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, হলিডের মোড়, শহীদ সরণী এলাকা, কলাতলীর হোটেল মোটেল জোন হয়ে কলাতলীর ডলফিন মোড় পর্যন্ত মানুষের জমায়েত হবে। এর জন্য পুরো এলাকায় দুই শতাধিক মাইক ব্যবহার করা হবে। রাতে ও দিনে সভাস্থলের সার্বিক প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। সভাস্থলে প্রধানমন্ত্রীর মূল মঞ্চটি হবে নৌকা আকৃতির। এর সাথে থাকবে চারটি উপমঞ্চ। যেখানে কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলার নেতৃবৃন্দ পৃথকভাবে অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে উদ্বোধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য থাকবে আলাদা মঞ্চ।

কক্সবাজার-৩

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চৌধুরী জানান, শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ১০টা থেকে জনসমাগম শুরু হবে। জেলার বিভিন্ন দূরের উপজেলা থেকে অনেকেই আগের দিন ৬ ডিসেম্বর কক্সবাজার শহরে আসবে। সভায় যাতে পাঁচ লাখ মানুষের সমাগমের অসুবিধা না হয়, সেজন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে পৌর এলাকাজুড়ে এলাকা সাজ সাজ রব চলছে। ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার পৌরসভা থেকে লাখের অধিক মানুষ উপস্থিত হবে। একই সঙ্গে রামু, ঈদগাঁও থেকে আসবে আরও দেড় লাখ মানুষ। এর বাইরে উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে মানুষের নগরী হয়ে উঠবে কক্সবাজার।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি শেষ করছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।