৫ বছর আগে ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকা ছেলেটি এখন ছাত্রদলে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন রাহাদকে (২৩) সদ্যঘোষিত চরপার্বতী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ত্যাগী ইউনিয়ন ছাত্রদল কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ নভেম্বর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এমরান হোসেন সাগর ও সদস্য সচিব নুর উদ্দিন রুবেল ১১ সদস্যবিশিষ্ট চরপার্বতী ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) উপজেলা ছাত্রদল একজনকে আহ্বায়ক, চার জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, একজনকে সদস্য সচিব এবং পাঁচ জনকে সদস্য করে ওই কমিটি প্রকাশ করে। ঘোষিত ওই কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছে দেলোয়ার হোসেন রাহাদের নাম।

অপরদিকে, ২০১৭ সালে চরপার্বতী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করা হয়। ঘোষিত ওই কমিটিতে দেলোয়ার হোসেন রাহাদকে সভাপতি ও খায়রুল ইসলাম পিয়াসকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দলীয় প্যাডে স্বাক্ষর দিয়ে ওই কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন তৎকালীন চরপার্বতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোতাহের হোসেন বাদল ও সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন পিয়াস।  

দেলোয়ার হোসেন রাহাদ দাবি করেন, ‘২০১৮ সালে এসএসসি পাস করে সরকারি মুজিব কলেজে ভর্তি হই। তখন এলাকার আওয়ামী লীগের নেতারা আমাকে ছাত্রলীগ করতে বাধ্য করে। আমাকে বলা হয়, কলেজে পড়ালেখা করতে হলে ছাত্রলীগ করতে হবে। একপর্যায়ে আমাকে চরপার্বতী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়। এ জন্য আমি চট্টগ্রামে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় বেশি থাকতাম।’

তিনি দাবি করেন, ‘আমি মনেপ্রাণে ছাত্রদল করি। এখনও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, তবু আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রদলের কমিটিতে এসেছি। পদবঞ্চিত নেতারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

চরপার্বতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোতাহের হোসেন বাদল বলেন, ‘২০১৭ সালে দেলোয়ার হোসেন রাহাদকে চরপার্বতী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়। এরপর আর কোনও ওয়ার্ড কমিটি হয়নি। সে হাইস্কুল থেকেই ছাত্রলীগ করতো। দীর্ঘদিন আমি দায়িত্বে নেই। পরিচর্যার অভাবে অনেক লোক নষ্ট হয়ে গেছে। আমি দায়িত্ব থেকে চলে আসার পর যারা দায়িত্বে আসে তারা ধরে রাখতে পারেনি। আমি গাছ রোপণ করেছি, এটা তো আমার অপরাধ নয়।’

সদ্য ঘোষিত চরপার্বতী ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন হৃদয়ের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজগর উদ্দিন দুখু বলেন, ‘ছাত্রদল করার যে কারও অধিকার আছে। সে হয়তো একসময় ছাত্রলীগ করেছে। ছাত্রদলের সঙ্গে হেঁটে সে ছাত্রদলের আদর্শ এবং উদ্দেশ্য তার কাছে ভালো লাগায় ছাত্রদলে এসেছে। সে যেহেতু মনেপ্রাণে ছাত্রদল করে, স্বাভাবিকভাবে সে পদ পেতেই পারে। তারপরও অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’