সালিশদারই চুরি করলেন ২৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে ঘর থেকে চুরি হওয়ার সাত দিন পর ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকাসহ স্থানীয় এক সালিশদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার সালিশদার মো. মিজানুর রহমান মিজান (৪২) উপজেলার একই ইউনিয়নের দক্ষিণ শরীফপুর গ্রামের সবুজ চেয়ারম্যান বাড়ির মৃত ইব্রাহীমের ছেলে।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি। এর আগে শুক্রবার রাতে শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শরীফপুর গ্রাম থেকে মিজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে পরিবারের সদস্যদের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে দক্ষিণ শরীফপুর গ্রামের ফজলুল হকের ঘরে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই সময় আলমারি থেকে ২৬ লাখ টাকা, কানের ৯ জোড়া দুল, একটি নেকলেস, পাঁচটি আংটি, গলার চেইন একটি, এনআইডি, জমির দলিলপত্র, চেকবই এবং মূল্যবান কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে যায় চোর। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর মামলা করেন ফজলুল হক।

মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে মিজানুর রহমান মিজান প্রতিবেশীদের সালিশ-দরবার করেন। বিভিন্ন সময়ে ছোটখাটো বিষয়ে ফজলুল হকেরও সালিশ-দরবার করেছেন। ফলে ফজলুল হকের বাড়িতে সবসময় যাতায়াত করতেন এবং বাড়ির সব বিষয়ে খোঁজখবর জানতেন। এরই সুবাদে ফজলুল হকের ঘরে ২৬ লাখ টাকা থাকার বিষয়টি জানতেন মিজান। একপর্যায়ে ২৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির পরিকল্পনা করেন। তদন্তে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চুরি হওয়া টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার আরেক প্রতিবেশী রাজু আহমদের ঘরের তোশকের নিচে রেখেছেন বলে জানান মিজান। কারণ ওই ঘরে কেউ থাকে না। সবসময় ঘরটি তালাবদ্ধ থাকে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজুর ঘরের তোশকের নিচে শপিংব্যাগে রাখা ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং প্লাস্টিকের কোটায় রাখা এক ভরি ১ আনা স্বর্ণ (কানের দুল, কানের টপ, নাকের নথ, আংটি, নাকফুল ও গলার চেইন) উদ্ধার করা হয়। ভুক্তভোগী পরিবার যে ট্যাংকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার রেখেছিল সেটি রাজুর বসতঘরের পশ্চিম পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন মিজান।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ‘বাকি টাকা ও স্বর্ণের বিষয়ে এখনও মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’