মারধরের পর গরম পানি, আত্মরক্ষায় ছাদ থেকে লাফ গৃহকর্মীর

কুমিল্লায় এক গৃহকর্মীকে (১২) মারধর করে গরম পানি দিয়ে শরীর ঝলসে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতন সইতে না পেরে ভুক্তভোগী দোতলা থেকে লাফিয়ে আত্মরক্ষা করে। বর্তমানে সে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৭টায় কুমিল্লা নগরীর ধর্মপুর ভিক্টোরিয়া কলেজ সংলগ্ন পূর্ব দৌলতপুর এলাকার এস আর টি প্যালেসে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের নাম তাহমিনা তুহিন। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহেরের স্ত্রী। ভুক্তভোগীর বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে।

জানা গেছে, মারধর করে গায়ে গরম পানি দেওয়ার সময় প্রাণ বাঁচাতে ওই কিশোরী দোতলা থেকে লাফ দেয়। পরে পাশের ভবনের কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে ৯৯৯-এ কল দেন। পুলিশ এসে দগ্ধ কিশোরীকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী জানায়, সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহেরের মেয়ে ফাহমিদা তিমুর ঢাকার বাসা এবং আবু তাহেরের কুমিল্লার বাসায় চার বছর ধরে কাজ করছে সে। কাজে দেরি হলে তাহেরের স্ত্রী ও মেয়ে বেত দিয়ে মারধর করে এবং গরম পানি ঢালে। গত সোমবার গরম পানি ঢেলে পা ঝলসে দেয়। মঙ্গলবারও মারধরের পর গরম পানি ঢালতে গেলে দোতলা থেকে লাফ দেয় সে। এরপর পাশের মেয়েদের হোস্টেলে গিয়ে আশ্রয় নেং।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোস্টেলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ওপরে চিৎকার শুনি এসে দেখি, ছোট একটি মেয়ে আমাদের রুমে ঢুকে আশ্রয় চাচ্ছে। তার পা ঝলসে গেছে। পরে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। আবু তাহেরের স্ত্রী তাহমিনা তুহিন মেয়েটিকে আটকে রাখতে চেয়েছিলেন। তবে স্থানীয়দের বাধায় পারেননি।’

এ বিষয়ে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের আত্মীয়ের মধ্যে। আমার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি দেবিদ্বারে তার বাড়ি। আমি ও আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ। কিছুদিন আগেও আইসিইউতে ছিলাম। মঙ্গলবার আমি বাইরে ছিলাম। আমার স্ত্রী জানিয়েছে, তাকে মারধর করেনি। সে পাপোশে পা পিছলে পড়ে গেলে একটু গরম পানি গায়ে পড়ে। পাশের হোস্টেলের একটি মেয়ে বিষয়টিকে বড় করেছে।’

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোর্শেদ জানান, মেয়েটির পা ঝলসে গেছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।