চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ

চট্টগ্রাম বন্দরে এবার ভিড়বে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার বড় জাহাজ। ফলে এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি আরও সহজ হয়ে যাবে। রবিবার (১৯ মার্চ) বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বড় জাহাজ ভেড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্দরের মূল জেটিতে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ ভেড়াতে আর কোনও বাধা নেই। এর আগে পরীক্ষামূলক সফলভাবে একটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানো হয়। এ লক্ষ্যে সার্কুলার জারি করা হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বন্দরের জেটিতে ১৯০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে নয় মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে। এ জাহাজে বহন করতে পারে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টিইউউএস কন্টেইনার। দশ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়লে বন্দরে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার কন্টেইনার পরিবহন করতে পারবে। বন্দরে ১৮টি জেটি রয়েছে। সব জেটিতে একই ড্রাফট থাকবে না। তবে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং চট্টগ্রাম কন্টেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) ১০ মিটার গভীরতা দেওয়া সম্ভব।’ 

এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি বন্দরের চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালের (সিসিটি) ১ নম্বর জেটিতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো হয়। ওই দিন এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে বন্দরে ১৬০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৭ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়ানো যেতো। ১৯৮০ সালে তা বাড়িয়ে ১৭০ মিটার লম্বা ও ৮ মিটার ড্রাফট করা হয়। ১৯৯০ সালে ১৮০ মিটার লম্বা ও সাড়ে আট মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো হতো। ১৯৯৫ সালে ১৮৬ মিটার লম্বা ও ৯ দশমিক ২ মিটার ড্রাফট করা হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বন্দরে ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো শুরু হয়।

উল্লেখ্য, শিপিং ব্যবসা এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের লম্বা ও ড্রাফট বাড়ানোর ব্যাপারে দাবি জানিয়ে আসছিল। এ দাবি পূরণে একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থার মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তের আলোকে গত এক বছর ধরে আমেরিকাভিত্তিক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী নদীর সার্বিক অবস্থার ওপর জরিপ চালায়। গত কয়েক মাস আগে প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক প্রতিবেদন বন্দরকে জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্ণফুলী নদীতে সহজেই সাড়ে ১০ মিটার গভীরতার এবং ২১০ মিটারের চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারবে।