চট্টগ্রামের আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৯ হাজার মানুষ

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ এলাকার বাসিন্দা মর্জিনা আক্তার (৫৫)। ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে রক্ষা পেতে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে উঠেছেন সন্ধি পাড়ার আশ্রয়কেন্দ্র মুজিব কিল্লায়। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তার গৃহপালিত দুটি গবাদি পশু ও মুরগি। তার মতো বাঁশখালীসহ জেলার ১৫ উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৫ মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লোকজনের জন্য মজুত করা হয়েছে শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।

মর্জিনা বলেন, ‘সাগরের খুব কাছাকাছি আমাদের বাড়ি। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এখানে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বহু মানুষ মারা গেছে। তাই জানমাল রক্ষায় স্বামী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে আগে থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে এসেছি।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও ১৫ উপজেলায় এক হাজার ১৭৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ৮০০ মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে ৮৯ হাজার ৬৫ জন আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন।

এর মধ্যে জেলার মীরসরাইয়ে ৬০, সীতাকুণ্ডে এক হাজার ২৮৯, বাঁশখালীতে ৪৫ হাজার ১৪৩, সন্দ্বীপে ২৯ হাজার ৮৮৫, আনোয়ারায় পাঁচ হাজার ২৮০, কর্ণফুলীতে ২০০, চন্দনাইশে এক হাজার ২০৮ ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন ছয় হাজার মানুষের। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে তিন হাজার ৪১৮টি গরু/মহিষ, চার হাজার ৩২৩টি ছাগল ও ভেড়া।

আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন পালিত গবাদি পশু

এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানুষ জানমাল রক্ষায় আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে আসছেন। এ পর্যন্ত অনেকেই তাদের গৃহপালিত পশুসহ নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। সেখানে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সিপিপির আট হাজার ৮৮০ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আট হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা এলাকায় আবহাওয়া বার্তা প্রচার করছে। পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।  

আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে- ফটিকছড়িতে ১১২, হাটহাজারীতে ১৮, মীরসরাইয়ে ৮৫, রাঙ্গুনিয়ায় ২১৭, রাউজানে ২, সন্দ্বীপে ১১৬, সীতাকুণ্ডে ২৫, বাঁশখালীতে ১২২, বোয়ালখালীতে ৬, চন্দনাইশে ৬, পটিয়ায় ১২৬, সাতকানিয়ায় ৪, আনোয়ারায় ৫৮, লোহাগাড়ায় ২৭, কর্ণফুলীতে ১০ ও সিটি করপোরেশনে ৯৪টি রয়েছে।