হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে নোয়াখালীর উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ১১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। হুমকির মুখে আছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে হাতিয়ার সঙ্গে শনিবার (১৩ মে) সকাল থেকে সারা দেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ আছে। ফলে হাতিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার যাত্রী আটকা পড়েছে। 

উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাজমারা ট্যাংকের ৫৪ নম্বর স্লুইস গেটের বেড়িবাঁধটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙা। বড় জোয়ার এলে বেড়িবাঁধসহ স্লুইস গেটসহ তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

জানা গেছে, শনিবার সারাদিন বৃষ্টিহীন আকাশ ছিল। তবে সন্ধ্যার আগ থেকে আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়।  ঢেউয়ের মাত্রা সাধারণ সময়ের থেকে বেশি হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের প্রস্তুত করা ৪৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানীয়দের যাওয়ার প্রবণতা কম থাকলেও শিশু, বৃদ্ধসহ কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসন। দিনভর স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং করে ও সাইরেন বাজিয়ে স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।

হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন বলেন, ‘৮১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে কোনও বেড়িবাঁধ নেই। ফলে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। ঘূর্ণিঝড় মোখায়ও নিঝুম দ্বীপে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছি।’

হাতিয়া উপজেলার নলচিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর উল্লাহ শিবলু বলেন, ‘নলচিরা এলাকায় বাতাসের গতিবেগ অনেক বেড়ে গেছে। আমার ইউনিয়নে ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে। জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে নলচিরার অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ারেআশঙ্কা আছে।’

জানা যায়, হাতিয়ার মোট ১১০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আছে। এর মধ্যে কয়েকটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ। 

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় নোয়াখালীতে ৪৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে ৩ লাখ ৩ হাজার ৬০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া আট হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১০২টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নোয়াখালীতে কর্মরত সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ায় ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।’