কক্সবাজারে ৯০ গ্রাম প্লাবিত, দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি 

টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সোমবার (৭ আগস্ট) রাতের পর থেকে আরও নতুন নতুন এলাকায় পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। নদী ও খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে গ্রামে। গত দুই দিনে পাহাড় ধস ও পানিতে ডুবে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, রামু  সদর উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৯০ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে এসব এলাকার দুই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। মাতামুহুরী ও বাকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাহাড়ি ঢলের তোড়ে মাতামুহুরী নদীর কমপক্ষে ১০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। মাতামুহুরীর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

Cox-flood-pic-01-8f1eb096c1312f13ac4ab30fe5f0aa64

গত এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজারে টানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। একইসঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি লোকালয়ে নেমে আসছে। সোমবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢলের স্রোত আরও বেড়েছে। পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া উপজেলার কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বরইতলী, হারবাং, পুর্ববড় ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড়ো ভেওলা, চিরিঙ্গা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, ফাসিয়াখালী চকরিয়া পৌরসভা, পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, রামু উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ার, রাজারকুল ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামে বন্যার পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলা কর্মকর্তা জামাল মোর্শেদ জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানির তোড়ে কইন্যারকুম, বিএমচর, মেহেরনামা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া আরও একাধিক এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান জানান, পাহাড়ি ঢলের পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এই বন্যা দেখা দেয়। পাহাড়ি ঢলে নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা লোকজনকে সমতলের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা জানান, পাহাড়ি ঢলে এই উপজেলার রাজাখালী, উজানটিয়া মগনামা, টৈটং,  বারবাকিয়া, শিলখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।