বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে এক সপ্তাহে পার হলো ৫৪ হাজার গাড়ি

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে গত এক সপ্তাহে পার হয়েছে ৫৪ হাজার ৬৫টি গাড়ি। চালুর শুরুর দিন গত ২৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত এক সপ্তাহে এসব গাড়ি পার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা।

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের টোল ব্যবস্থাপক বেলায়েত হোসেন রবিবার (৫ নভেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২৯ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। প্রথম দিন রবিবার থেকে হরতাল-অবরোধের প্রভাব পড়েছে। যা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছিল। এ কারণে দূরদূরান্ত থেকে যানবাহন আসতে পারেনি। এতে টোল আদায়ও হয়েছিল কম। ২৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সাত দিনে ৫৪ হাজার ৬৫টি গাড়ি টানেল দিয়ে পার হয়েছে। এ সময় টোল আদায় হয় এক কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সবচেয়ে বেশি গাড়ি পার হয়েছে টানেল দিয়ে। ওই দিন ১৪ হাজার ৭৯৮টি গাড়ি পার হয়েছে। এতে ৩৩ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। শনিবার (৪ নভেম্বর) সাত হাজার ১৯৬টি গাড়ি পার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১৫ লাখ ৭১ হাজার ৪০০ টাকা।’

বঙ্গবন্ধু টানেল

টানেল প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী (অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ) কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘টানেলের ভেতর দিয়ে দৈনিক ১৭ হাজার যানবাহন চলাচলের টার্গেট রয়েছে। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে টোল আদায় সম্পন্ন হচ্ছে। টোল আদায়ের জন্য ১২টি বুথ আছে। প্রথমে ১০টি বুথ চালু করা হয়েছে। এখানে তিনভাবে টোল দেওয়ার সুযোগ আছে। তবে বর্তমানে ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হচ্ছে।’

গত ২৮ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্যে দিয়ে দেশের প্রথম টানেলটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নিজ হাতে টোল দিয়ে টানেল পার হয়ে আনোয়ারা প্রান্তে আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নিজের গাড়ির জন্য ২০০ টাকা এবং বহরে থাকা ২০টি গাড়ির জন্য চার হাজার টাকা টোল দেন।

বঙ্গবন্ধু টানেল

টানেল পাড়ি দিতে প্রাইভেটকার ও পিকআপ ২০০, মাইক্রোবাস ২৫০, বাস (৩১ সিটের কম) ৩০০, বাস (৩২ সিটের বেশি) ৪০০, বাস (৩ এক্সেল) ৫০০, ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ৪০০, ট্রাক (৫ দশমিক ০১ থেকে ৮ টন) ৫০০, ট্রাক (৮ দশমিক ০১ থেকে ১১ টন) ৬০০, ট্রাক ও ট্রেইলার (৩ এক্সেল) ৮০০, ট্রাক ও ট্রেইলার (৪ এক্সেল) ১০০০ টাকা টোল দিতে হয়।

শুরুতে টানেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা দিচ্ছে। বাকি টাকা দেয় বাংলাদেশ সরকার।