ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় ২ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বরখাস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় দুই প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দুই মাসের জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ১৪ নভেম্বর ইসির নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন আশুগঞ্জের আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হোসেন মো. হাবিবুর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের আশুগঞ্জ শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল্লাহ। এর মধ্যে হাবিবুর রহমান আশুগঞ্জের যাত্রাপুর নূরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ছিলেন এবং শফিউল্লাহ আশুগঞ্জের শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ছিলেন।

উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে ৫ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আশুগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর নূরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারের মাধ্যমে পৃথকভাবে তদন্ত করিয়েছে ইসি। উভয় প্রতিবেদনে প্রকাশিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ১৫ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নূরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হোসেন মো. হাবিবুর রহমান ও শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল্লাহকে বরখাস্ত করা হলো। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিতে কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আদেশ মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহণসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় গৃহীত ব্যবস্থা সাত দিনের মধ্যে ইসিকে জানানোর অনুরোধ করা হলো।

শনিবার বিকালে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালি কোনও চিঠি দেয়নি ইসি। তা দেওয়ার কথাও নয়। এ বিষয়ে তাদের সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি পাঠাবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জিয়াউল হক মৃধা পান ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। পরে অনিয়মের বিষয়টি সামনে আসলে নির্বাচনের ফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত করে ইসি। অনিয়ম তদন্তের পর আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।