জয় নিয়ে চিন্তামুক্ত চট্টগ্রামের তিন মন্ত্রী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম থেকে জয়ী হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন তিন জন। এর মধ্যে দুজন মন্ত্রী এবং একজন উপমন্ত্রী। এবারও তারা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠে আছেন। তবে তিনটি আসনে বড় প্রতিপক্ষ না থাকায় নৌকার বিজয় নিয়ে নির্ভার আছেন এই তিন মন্ত্রী। কারণ তাদের বিপরীতে দলের কোনও স্বতন্ত্র প্রার্থীও নেই। যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের অধিকাংশই এলাকার ভোটারদের কাছে অপরিচিত। ফলে চিন্তামুক্ত নৌকার এই প্রার্থীরা। 

এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও আংশিক বোয়ালখালী) আসনের প্রার্থী তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনের প্রার্থী শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

চট্টগ্রাম-৭ আসনে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নৌকা প্রতীকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী। তারা হলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আহমদ রেজা (চেয়ার), তৃণমূল বিএনপির খোরশেদ আলম (সোনালী আঁশ), জাতীয় পার্টির আহমেদ রানা (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ ইকবাল হাছান (মোমবাতি) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. মোরশেদ আলম (একতারা)। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রার্থী প্রচারণায় নেই। অনেকে এলাকায় পোস্টারও দেননি।

চট্টগ্রাম-৯ আসনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর নৌকা প্রতীকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় জন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির সানজিদ রশিদ চৌধুরী (লাঙ্গল), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ন্যাপের মিটল দাশ গুপ্ত (কুঁড়েঘর), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম (মোমবাতি), কল্যাণ পার্টির সুহাম্মদ নুরুল হোসাইন (হাতঘড়ি) ও তৃণমূল বিএনপির সুজিত সাহা (সোনালী আঁশ)। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পোস্টার ও প্রচারণা চোখে পড়লেও অন্যরা মাঠে নেই। 

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় জন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির আবদুর রব চৌধুরী (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহমেদ চৌধুরী (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আরিফ মঈন উদ্দিন (একতারা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের রশিদুল হক (বটগাছ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসেন (মোমবাতি) ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন (চেয়ার)। এর মধ্যে লাঙ্গল আর নৌকা ছাড়া প্রচারণার মাঠে নেই অন্য প্রার্থীরা।

ভোটাররা বলছেন, জয় নিয়ে বর্তমান এই তিন মন্ত্রী অনেকটাই নির্ভার আছেন। তাদের সঙ্গে নেই শক্ত কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী। দলের কোনও স্বতন্ত্র প্রার্থীও নেই। এরপরও প্রতিদিন পথসভা, গণসংযোগ এবং প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকার প্রার্থীরা। অন্য প্রার্থীদের কেউ ভোট চাইতে আসেননি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দুই লাখ ১৭ হাজার ১৫৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. নুরুল আলম পেয়েছিলেন ছয় হাজার ৬৫ ভোট। 

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী পেয়েছিলেন দুই লাখ ২৩ হাজার ৬১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছিলেন ১৭ হাজার ৬৪২ ভোট। 

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী পেয়েছিলেন দুই লাখ ৪৩ হাজার ৪১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৮৫৩ ভোট। 

আবারও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‌‘আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বিএনপির ভোট বর্জনের ডাকে সাড়া না দিয়ে ভোটারদের নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই।’