চট্টগ্রাম-২ আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে মাইজভান্ডার দরবার শরিফের গাউছিয়া মঞ্জিলে সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। এবার নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে ফুলের মালা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন এই প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘ফটিকছড়ি থেকে আমি চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এর মধ্যে তিনবারই নির্বাচিত হয়েছি নৌকা প্রতীক নিয়ে। এই নৌকার মাধ্যমে আমি বারবার সম্মানিত হয়েছি। যেহেতু এবার ১৪-দলীয় জোটের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থীর প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তার প্রতি সম্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে থাকলে ভোটের সমীকরণ অন্য রকম হবে। আমার প্রাপ্ত ভোট নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে বাধা হতে পারে। এজন্য নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।’
তরিকত ফেডারেশন সারা দেশে ৪২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে উল্লেখ করে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী আরও বলেন, ‘এর মধ্যে শুধু ফটিকছড়িতে নৌকাকে সমর্থন জানিয়ে আমি সরে দাঁড়ালাম। বাকি ৪১ জন মাঠে আছেন।’
কোনও চাপে পড়ে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন কিনা জানতে চাইলে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোনও চাপে নয়, নৌকাকে ভালোবেসে এবং নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে চাই।’
১৪-দলীয় জোটের শরিক হিসেবে তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ফটিকছড়িতে নির্বাচন করে আসছেন। নির্বাচন সামনে রেখে লিবারেল ইসলামিক জোট নামে ছয় দলের একটি জোটও গঠন করেছেন তিনি। নজিবুল বশর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৪ সালে দল বদল করে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। একই বছরের ১২ জুনের নির্বাচনে নজিবুল পরাজিত হন। নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রয়াত রফিকুল আনোয়ার। ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে রফিকুলের কাছে আবার পরাজিত হন নজিবুল। এরপর বিএনপি ছেড়ে তিনি গঠন করেন তরিকত ফেডারেশন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। ফটিকছড়ি থেকে মোট চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।