থেমেছে গোলাগুলির শব্দ, মনে ভয় নিয়ে ঘরে ফিরছেন সীমান্তের বাসিন্দারা

টানা তিন দিন গুলি ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধু‌মের তুমব্রু ও ডেকুব‌নিয়া সীমান্ত এলাকা। থেমে থেমে আবার কখনও একনাগাড়ে সীমান্তের ওপার থেকে ভেসে আসা গোলাগুলির শব্দ আতঙ্ক ছড়িয়েছে এই অঞ্চলে। এতে আতঙ্কিত হ‌য়ে বিভিন্ন পাড়ার প্রায় ২৪০ পরিবারের মানুষ আশ্রয় নেন স্বজনদের বাড়ি ও আশ্রয়কেন্দ্রে। মর্টার‌শে‌লের আঘা‌তে ঘটনাস্থলে দুই জন নিহত ও একজন আহত হন।

তবে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে এখন পর্যন্ত তুমব্রু ও ডেকুবনিয়ায় এখ‌নও পর্যন্ত কোনও গোলাগু‌লির শব্দ আসেনি। এদিকে আজ সারাদিন কোনও মিয়ানমারের কোনও বাহিনীর সদস্যও বাংলাদেশে প্রবেশ করার খবর পাওয়া যায়নি। ধী‌রে ধী‌রে অন‌্যত্র আশ্রয় নেওয়া প‌রিবারগু‌লোও বাড়িতে ফির‌তে শুরু করেছেন। তবে এখনও আতঙ্ক রয়েছে প্রত্যেকের মনে।

স্থানীয়‌দের ম‌তে, মিয়ানমারের চলমান এই যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক। যার ফলে বিকট শব্দে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের সীমান্ত এলাকায় কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সময় গোলা এসে পড়েছে সীমান্তের এপারে।

তুমব্রু এলাকার শূন্যরেখার পার্শ্ববর্তী বাইশফাঁড়ি, চাকমা পাড়া, উত্তর পাড়াসহ সাত পাড়ার ২৪০ পরিবার মঙ্গলবার রাত থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বাড়ি ফির‌তে শুরু করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুস সালাম বলেন, আমরা কয়েকদিন আতঙ্কে ছিলাম। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হ‌য়ে‌ছে। নিজ বাড়িতে ফিরেছি। তারপরও এখনও মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নুরুল আলম বলেন, চারদিকে কেবল গুলি আর গুলির শব্দ। গুলির শব্দে সবাই এদিক সেদিক ছুটেছি। মনে হচ্ছিল এই বুঝি গুলি এসে পড়‌লো। তবে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

এদিকে সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত এবং বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে বলে জানালেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, বান্দরবান সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। পরিস্থিতি পর্যা‌লোচনা ক‌রে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে সংঘর্ষের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। লড়াইয়ের মুখে রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে বিজিপির সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেন। এখন পর্যন্ত ৩২৯ জন অনুপ্রবেশ করেছেন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও তাদের পরিবারকে সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।