গরু চরাতে গিয়ে অপহরণের শিকার আরও ৬ জন

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি এলাকা থেকে আরও ছয় জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। অপহরণকারীরা অপহৃত পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করছে বলে জানা গেছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং বাদিবন্যা পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গল কাটতে ও গরু চরাতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন তারা।

অপহৃতরা হলেন টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচি পাড়া এলাকার বেলালের দুই ছেলে জুনাইদ (১২) ও মোহাম্মদ নুর (১০), একই এলাকার লেদুর ছেলে শাকিল (১৫), শহর আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫), নুরুল ইসলামের ছেলে আকতার (২৫), নাজির হোসেনেন ছেলে ইসমাইল (২৪)।

এ ছাড়া সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) উপজেলার হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু চরাতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন দুজন। তারা এখনও ফিরে আসেননি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাজালাল বলেন, ‘এলাকার লোকজনের কাছ থেকে অপহরণের বিষয়টি শুনেছি। কীভাবে অপহরণের শিকার হয়েছে তারা (অপহৃত) বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’

জানতে চাইলে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘বুধবারও আমার এলাকা থেকে ছয় জনক ধরে নিয়ে গেছে। অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর আগে অপহরণের শিকার আরও দুজনের খোঁজ এখনও মেলেনি।’

অপহৃত শাকিলের পিতা লেদু মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমার ছেলে শাকিল গরু চরাতে যায় হোয়াইক্যং বাদিবন্যা পাহাড়ে। দুপুরের সময় অপহরণকারী আমাকে ফোন করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি গরিব মানুষ মাটি কেটে সংসার চালাই। টাকা না দিলে আমার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেন অপহরণকারীরা। তাদের কাছে ফরিদ আলম নামে আমার ভাইও রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমার ভাই ও ছেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।’

তবে মুক্তিপণের বিষয়টি জানা নেই উল্লেখ করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ‘খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে, ২১ মার্চ ভোরে হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি হন পাঁচ কৃষক। পরে ২৪ ও ২৫ মার্চ মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসেন তারা। ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে মাদ্রাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে (৬) অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। ১২ দিন অতিবাহিত হলেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি।

এদিকে সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪-এর মার্চ পর্যন্ত সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে পাহাড়কেন্দ্রিক ১০৩ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে ৫২ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা। যারা ফিরে এসেছেন তাদের বেশির ভাগকেই মুক্তিপণ দিতে হয়েছে।