কানে ডিভাইস নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে কানের ভেতরে বিশেষ কায়দায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস রেখে নকল করার চেষ্টার অভিযোগে পরীক্ষার্থীসহ দুই জনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার ও তার ভাই আব্দুল জলিল। তারা জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের টুকচানপুর এলাকার আব্দুল মালেকের সন্তান।

কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় কেন্দ্রের ১০১ নম্বর কক্ষে থাকা রিনা আক্তার পরীক্ষার শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা অতিক্রম হলেও প্রশ্নের উত্তরপত্রে কোনও কিছু না লিখে বসে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত কেন্দ্র পরিদর্শকের সন্দেহ হয়। পরে তাকে তল্লাশি করে বিশেষ কায়দায় কানের ভেতরে লুকিয়ে রাখা খুব ছোট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।

পরে কলেজের অধ্যক্ষ হরিলাল দেবনাথ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখকে খবর দেন। ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে পরীক্ষার্থীর দেওয়া তথ্যমতে তার ভাই আব্দুল জলিলকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

ইউএনও মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজে শুক্রবার সকালে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালে পৌর ডিগ্রি কলেজে ১০১ নম্বর কক্ষে রিনা আক্তার নামে এক পরীক্ষার্থী অবৈধ পন্থায় কানের ভেতর বিশেষ কায়দায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করেন। পরীক্ষা চলাকালে ওই পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রে কোনও কিছু লিখছিলেন না। বাইর থেকে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বিষয়টি কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের সন্দেহ হয়। পরে তারা তাকে তল্লাশি করে তার কান থেকে খুবই ছোট আকারের একটি ডিভাইস উদ্ধার করেন।

তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে ডিভাইসের মাধ্যমে ওই পরীক্ষার্থী পরীক্ষার শেষ মিনিট ১০ মিনিট আগে উত্তর লেখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে একটি বিশাল চক্র জড়িত থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাইরে থাকা তার ভাইয়ের  মাধ্যমে ওই ডিভাইসটি সংগ্রহ করেছিলেন। এ কারণে তার ভাইকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হবে।